ধ্বংসের পথে রুশ এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি, উ. কোরিয়ার মতো পরিণতির আশঙ্কা

Slider সারাবিশ্ব

ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডার আকাশ রাশিয়ার জন্য নিষিদ্ধ। ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে পশ্চিমাদের কঠিনতম নিষেধাজ্ঞায় পড়েছে রাশিয়া। ফলে শিগগিরই রুশ নাগরিকদের বিমানে চরে ইউরোপ কিংবা উত্তর আমেরিকা সফর আর সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে রাশিয়াকে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে তুলনা করলেন মিশিগানভিত্তিক অ্যারোডায়নামিক এডভায়জরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিচার্ড আবুলাফিয়া। তিনি বলেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার বিমান শিল্প এখন উত্তর কোরিয়ার মতো হয়ে যাবে। আর এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন খুব সহজ। রুশ এয়ারলাইনগুলো আর চাইলেও উড়তে পারবে না। তাদের বিমানগুলো সব পশ্চিমা প্রযুক্তিতে তৈরি।
এগুলোকে চালু করতে হলে তাদেরকে পুরোপুরি নতুন প্রযুক্তিতে বিমান তৈরি করতে হবে।

রাশিয়া হুমকি দিয়েছে, যেসব দেশ ফ্লাইটের উপরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেসব দেশের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু এর আগেই রাশিয়ার বিমান শিল্প পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। লন্ডনের অ্যারোস্পেস ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক স্যাশ তুসা আল-জাজিরাকে বলেন, দুই কারণে রাশিয়ার জন্য বিমান পরিচালনা কঠিন হতে থাকবে। প্রথম কারণ হচ্ছে, রাশিয়ার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর আকাশ নিষিদ্ধ। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার বিমানগুলোকে কোনো বিক্রয়োত্তর সেবা দেবে না কোম্পানিগুলো।

রাশিয়ার বাণিজ্যিক বিমানগুলো মূলত সব বোয়িং ও এয়ারবাসের। তারা রুশ এয়ারলাইনগুলোকে আর কোনো পার্টস সরবরাহ করবে না। এমনকি মস্কোতে থাকা একটি ডিজাইন সেন্টারও বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বোয়িং। ফলে কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যেই রাশিয়ার বিমান সংস্থাগুলোর পার্টসের সংকট শুরু হবে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে রুশ বিমান সংস্থাগুলো কিছু বিমান খুলে এর পার্টস অন্য বিমানে লাগিয়ে চলতে থাকবে। তবে সেভাবেও খুব বেশিদিন টিকে থাকা সম্ভব হবে না।

রাশিয়ায় সক্রিয় যাত্রীবাহী ও কার্গো বিমানগুলোর তিন-চতুর্থাংশই বোয়িং ও এয়ারবাসের। উভয় কোম্পানিরই ৩০০ এরও বেশি বিমান চলছে রাশিয়ায়। রুশ এয়ারলাইনগুলোতে মাত্র ১৩৬টি রাশিয়ায় তৈরি বিমান চলে। রাশিয়ার বিমান সংস্থাগুলোর ভাগ্য কতদিন ইউক্রেনে যুদ্ধ চলবে তার উপরে আর নির্ভর করছে না। যুদ্ধ শেষ হলেও পশ্চিমের চোখে রাশিয়া হুমকি হয়েই থাকবে। সবকিছু আবার কখনো আগের মতো হয়ে যাবে, এমন কোনো নিশ্চয়তা আর নেই। তুসা বিশ্বাস করেন, বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমা বিশ্ব ও রাশিয়ার মধ্যে এই ফাটল থেকে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *