পরকীয়া-নির্যাতন; স্ত্রীর মামলায় পুলিশের ওসি গ্রেফতার

Slider নারী ও শিশু

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মারপিট ও নির্যাতনের অপরাধে দায়ের করা মামলায় চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামসুদ্দোহাকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকার রাজাবাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করে গুলশান থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পর শুক্রবার সকালে শামসুদ্দোহাকে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় আনা হয়।

গ্রেফতারকৃত পুলিশ পরিদর্শক মো. শামসুদ্দোহা গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার পশ্চিম গোপীনাথপুর গ্রামের নুরুদ্দিন আহম্মেদের পুত্র।

ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি এম এ জলিল জানান, পুলিশ পরিদর্শক শামসুদ্দোহা চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। নারী নির্যাতন দমন আইনে তার স্ত্রী ফারজানা খন্দকারের দায়ের করা মামলায় তাকে ঢাকার রাজাবাজর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ফারজানা খন্দকার বাদী হয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় যৌতুক দাবি করে মারপিট ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে পুলিশ পরিদর্শক শামসুদ্দোহাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাদী ফারজানা খন্দকার জানান, গত ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট পারিবারিকভাবে শামসুদ্দোহার সাথে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত তিনি ফরিদপুরে বাবার বাড়িতেই থাকতেন। ওই বছরের নভেম্বর মাসে সামসুদ্দোহা তাকে তার কর্মস্থল যশোরে নিয়ে যান। সেখানে ভাড়া বাসায় বসবাস করতে শুরু করেন তারা। এর কয়েকদিন পর থেকেই তার আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করেন ফারজানা।

তিনি আরো জানান, ওই সময় তিনি জানতে পারেন অন্য একটি মেয়ের সাথে পরকীয়ায় জড়িত তার স্বামী। এ ব্যাপারে তিনি বাধা দিলে ওই সময় থেকেই তার উপর নির্যাতন শুরু হয়।

ফারজানা জানান, এর কিছুদিন পর শামসুদ্দোহা প্রমোশনের জন্য ৭০ লাখ টাকা বাবার কাছ থেকে এনে দিতে বলে। তিনি ১৫ লাখ টাকা এনে দেন, কিন্তু তাতে শামসুদ্দোহা খুশি হয়নি। এরপর নির্যাতন বাড়তে থাকে।

‘স্বামী প্রতিদিন নেশা করে এসে আমাকে মারপিট করতো’-মন্তব্য করে ফারজানা বলেন, ‘ওই সময় আমি সেখান থেকে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মহল্লায় অবস্থিত বাবার বাড়ি চলে আসি। তখন আমি ৩ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা। বাবার বাড়িতেই আমি পুত্র সন্তানের মা হই। সন্তানের বয়স এখন দুই বছর। সন্তানের মুখ পর্যন্ত এখনও দেখেননি তিনি।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল খায়ের বলেন, শুক্রবার বিকেলে শামসুদ্দোহাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *