গেল এক সপ্তাহে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। তবে বেড়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা। বিপরীতে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে গত সপ্তাহে হুট করেই পেঁয়াজের দাম এক লাফে বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। এই অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর গেল এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। তবে এখনো বেশিরভাগ বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর বেশিরভাগ সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৬০ থেকে ২৯০ টাকা।
মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী হাছান আলী বলেন, আমাদের ধারণা বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার কারণে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন বেড়েছে। হোটেলেও বিক্রি বেড়েছে। এ কারণে সোনালি মুরগির চাহিদা বেড়ে গেছে। আর চাহিদা বাড়ার কারণে দামও বেড়েছে।
তিনি বলেন, সোনালি মুরগি বাসাবাড়ির পাশাপাশি হোটেলের জন্যও বিক্রি হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও সোনালি মুরগি ব্যবহার করা হয়। আর ব্রয়লার মুরগি সাধারণত বাসাবাড়িতে খাওয়ার জন্য কিনেন ক্রেতারা। এ কারণে অনুষ্ঠান বেশি হলে ব্রয়লার মুরগির তুলনায় সোনালি মুরগি বেশি বিক্রি হয়।
খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী রুহুল আমিন বলেন, ব্রয়লার মুরগি নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি খায়। এখন বাজারে সবকিছুর দাম অনেক বেশি। চাল, ডাল, তেল কিনতে নিম্ন আয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের ধারণা এ কারণেই বাজারে ব্রয়লার মুরগির চাহিদা কিছুটা কমেছে। যে কারণে সোনালি মুরগির দাম বাড়ার পরও ব্রয়লারের দাম কমেছে।
এদিকে গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে এখন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের দামের বিষয়ে মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, পাইকারিতে দাম বাড়ায় আমরা কয়েক দিন পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা বিক্রি করেছি। তবে এখন পাইকারিতে দাম কিছুটা কমেছে। ফলে আমরা কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছি। দুদিন ধরে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছি ৪৫ টাকা।
সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ছোট ফুলকপির পিস বিক্রি করছেন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। আর বড় ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ফুলকপির দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
ফুলকপির মতো দাম অপরিবর্তিত রয়েছে অধিকাংশ সবজির। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। শালগমের (ওল কপি) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। লাউ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দামেও পরিবর্তন আসেনি।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা।
এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। ছোট ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে।