ইউক্রেন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উদ্বেগ

Slider সারাবিশ্ব

ইউক্রেনে ক্রমবর্ধমান সহিংস পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মতে, এ ধরনের সহিংসতা পুরো অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতায় গুরুতর প্রভাব ফেলবে। এজন্য উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং কূটনীতি ও সংলাপের মাধ্যমে সঙ্কট সমাধানের পথে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।

পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দেয়া বা না দেয়াকে কেন্দ্র করে ইউক্রেনের উত্তেজনাকর যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কে ইতোপূর্বে বাংলাদেশকে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ম্যানটিটস্কি গত মাসে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সাথে দেখা করে ইউক্রেন ইস্যুতে মস্কোর অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র একটি চিঠি দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এ ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে। সম্প্রতি পররাষ্ট্র সচিবের সাথে দেখা করে ইইউ রাষ্ট্রদূত চালর্স হোয়াইলি ইউক্রেন ইস্যুতে নিজেদের উদ্বেগ তুলে ধরে এর সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে সাবধান করেছেন।

এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, ইউক্রেন পরিস্থিতি সম্পর্কে সব দেশকেই নিজেদের অবস্থান তুলে ধরছে পশ্চিমা দেশগুলো। আমরা বলেছি, বিবদমান পক্ষগুলো বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র। আমরা চাইনা আমাদের এমন একটি পরিস্থিতিতে ঠেলে দেয়া হোক যেখানে আমাদের বন্ধুদের মধ্য থেকে বাছাই করতে হবে। আমরা চাই সব পক্ষই যাতে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করে এবং সঙ্কটের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে পথ বের হয়।

ইউক্রেন নিয়ে বিশ্বের বৃহত শক্তিগুলোর বাংলাদেশকে অবস্থান ব্যাখ্যা করার কারণ সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয়েই জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো ক্ষমতার অধিকারী। তাই এই ফোরামে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনায় জটিলতা রয়েছে। কিন্তু জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ইস্যুটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার পরিষদে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনার চেষ্টা হতে পারে। ৪৭ সদস্যবিশিষ্ট এ পরিষদেও বাংলাদেশ রয়েছে। আলোচনার পাশাপাশি কোনো প্রস্তাব উঠলে তাতে ভোটের বিষয়টি চলে আসবে।

ইউক্রেন কখনো ন্যাটোতে যোগ দেবে না – এমন লিখিত নিশ্চিয়তা চাইছে রাশিয়া। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ইইউ’র সদস্যভুক্ত কয়েকটি দেশ বিষয়টি নিয়ে রাশিয়ার সাথে আলোচনা করে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্রাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।

রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন প্রান্তে রাশিয়া একযোগে ইউক্রেনের ওপর হামলা চালাচ্ছে। এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইইউ রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *