শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত শনিবার

Slider শিক্ষা

</a

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত শনিবার বিকেলে আলোচনা শেষে নেওয়া হবে। শুক্রবার রাত নয়টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থী ইয়াছির সরকার এবং মোহাইমিনুল বাশার এই তথ্য জানান। এর আগে বিকেলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল আলোচনা করেন।

আলোচনায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ বেশকিছু দাবি এবং কিছু প্রস্তাবনা জানান মন্ত্রীকে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, দ্রুততম সময়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অপসারণ করে একজন গবেষণামনা, শিক্ষাবিদ ও অবিতর্কিত ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া; শাবিতে সকল প্রশাসনিক পদে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে; অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের উপর দায়েরকৃত মামলাগুলো তুলে নিতে হবে; শিক্ষার্থীদের সব অনলাইন লেনদেনের একাউন্ট অবিলম্বে খুলে দিতে হবে; পুলিশি হামলার শিকার শিক্ষার্থী সজল কুন্ডুকে এককালীন ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে তাকে তার যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরি দিতে হবে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের প্রায় সবগুলো দাবি নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। কিন্তু মূল দাবি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিষয়ে তিনি আমাদের জানিয়েছেন এটা আচার্যের এখতিয়ারের বিষয়। তিনি আচার্যের শিক্ষা সচিব হিসেবে তার কাছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যে অভিযোগ তা জানাবেন এবং শাবির চলমান সংকট নিরসনে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করবেন আশ্বাস দিয়েছেন।’

এদিকে সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কিছু প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনাগুলো হলো-

১. দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বার্ষিক বাজেটের কমপক্ষে ৩০% গবেষণা খাতে বরাদ্দ করতে হবে।

২. শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নূন্যতম যোগ্যতা পিএইচডি ডিগ্রিতে উন্নীত করতে হবে।

৩. শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নির্দিষ্ট সংখ্যক ডেমো ক্লাস নিতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের থেকে ন্যূনতম মূল্যায়ন মার্ক অর্জন করলেই তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

৪. শিক্ষকদের কাজে যোগ দেওয়ার আগে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে গোপনীয় কোড ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

৬. বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুলিশের জন্য সব স্থায়ী স্থাপনা অপসারণ করতে হবে।

৭. আবাসিক হলগুলো বছরের ৩৬৫ দিনই সব সুযোগ সুবিধাসহ খোলা রাখতে হবে।

৮. ক্যাম্পাসে উন্নয়নমূলক কাজের পরিকল্পনা উন্মুক্ত করে দিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে উন্মুক্ত স্থাপত্য প্রতিযোগীতার ব্যবস্থা করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনার বিষয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করলে শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের বেশিরভাগ প্রস্তাবে মন্ত্রী ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। এগুলো নিয়ে সামনে কাজ করার আশ্বাস দেন।

এ দিকে মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা শেষে ক্যাম্পাসে আসেন। তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রশংসা করে বলেন, আপনাদের আন্দোলনের প্রশংসা আবারও করছি। খুবই ভালো এবং অহিংস একটা আন্দোলন ছিলো।

তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘক্ষণ আলাপ হয়েছে। তারা আমাদের কাছে নানান বিষয়ে জানিয়েছেন এবং লিখিত কিছু দাবি বা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। যে দাবিগুলো করা হয়েছে তা অত্যন্ত যৌক্তিক। অনেকগুলোর কাজ এমনিতেই শুরু হয়েছে। আর কিছু এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কারণ আপনাদের দাবির অধিকাংশ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষার মান উন্নয়ন ও শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়ন সম্পর্কিত। আমাদের লক্ষ্যও তাই, যেন শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত এবং সুন্দর পরিবেশে পড়াশোনা করতে পারে। শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবের সঙ্গে আমরা নীতিগতভাবে একমত প্রকাশ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *