খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের পদক্ষেপ সরকারের পতনকেই তরান্বিত করবে’

Slider জাতীয়

65019_sal

বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধী জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের যে কোন পদক্ষেপ সরকারের পতনকে তরান্বিত করবে বলে মন্তব্য করেছে ২০ দল। জোটের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ফ্যাসিবাদী একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েমের পথে প্রধান অন্তরায় গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের আপোষহীন নেতা খালেদা জিয়াকে অবৈধ স্বৈরশাসক মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করার সকল আয়োজন সম্পন্ন  করেছে। মামলা-হামলা-গ্রেপ্তারের ভয়-ভীতি দেখিয়ে চলমান গণআন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবে না। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ সারাদেশ থেকে ২০ হাজারেরও অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে এবং তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে শত-শত নেতা-কর্মীকে হতাহত করেও গণআন্দোলনকে দমাতে না পেরে সরকার অবৈধ গদি রক্ষার শেষ চেষ্টা হিসেবে খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করার অপচেষ্টা করছে। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের যে কোন পদক্ষেপ বরং সরকারের পতনকেই তরান্বিত করবে। বিবৃতিতে তিনি বলেন, দলীয়করণ, কুক্ষিগতকরণ, নগ্নহস্তক্ষেপ ও বিচারক অভিশংসন আইন পাশ করিয়ে সরকার দেশে বিচারিক নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে বিচারব্যবস্থাকে বিরোধী দল ও মতকে দমনের হাতিয়ারে পরিণত করেছে। তারই অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারী করা হয়। সালাহউদ্দিন বলেন, দেশবাসী, আন্তর্জাতিক মহলসহ সকলেই অবহিত আছেনÑ খালেদা জিয়াকে সরকার অঘোষিতভাবে গৃহবন্দী অবস্থায় রেখেছেন। যেখানে দীর্ঘ দুই সপ্তাহেরও বেশী সময় ধরে খাদ্য সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এখনও পর্যন্ত তিনি টেলিফোন, ফ্যাক্স, কেবল সংযোগ ও নেটওয়ার্কসহ সকল বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। আদালতের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাইÑইতোপূর্বে আদালতে যাওয়ার পথে সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা খালেদা জিয়ার গাড়ী বহরে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে দলের অনেক নেতা-কর্মীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে পুলিশী সহায়তায়। সেই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এখন পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে আদালতে উপস্থিত হতে অপারগতার কথা আদালতকে জানানো হয়েছে। তারপরও সরকারী প্রভাবে দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারী করা হয়েছে। সম্পূর্ণ হীন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার মানসে সরকার এ জাতীয় মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রীকে হয়রানী করার ঘৃন্য চক্রান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, অবরুদ্ধ গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের বিজয়ের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার, মৌলিক ও মানবাধিকার, বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে দেশের সর্বস্তরের জনগণ আজ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। সংগ্রামী জনতার ন্যায্য দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলমান গণআন্দোলন দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবে। এদেশের সংগ্রামী জনগণের ইতিহাস আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে গণমানুষের অধিকার আদায়ের ইতিহাস। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২৫শে ফেব্রুয়ারী পিলখানা ট্র্যাজেডি’র ষষ্ঠবার্ষিকী। ২০০৯ সালের এদিনে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নাটক মঞ্চস্থ করার মাধ্যমে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্ত শুরু হয়েছিল। যথাসময়ে দ্রুততার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নির্লিপ্ততার কারণেই ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে সেদিন প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছিল। এই নৃশংস চক্রান্তের সাথে সরকারী মহলের অনেকেই জড়িত বলে সচেতন মহল মনে করে। আজকের এই শোকাবহ দিনে আমরা পিলখানা ট্র্যাজেডি’র সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই এবং বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *