নৌকায় সিল মেরে দেখাতে বলে ভাইরাল প্রার্থী

রাজনীতি

রাজশাহী: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে সিল দিয়ে প্রকাশ্যে দেখাতে বলা এক প্রার্থী ভাইরাল হয়েছিলেন- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিষয়টি নজরে আসার পরপরই তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শাতেও বলেছিলেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।

কিন্তু তার জবাবে প্রার্থী দাবি করেছেন- ভাইরাল হওয়া ভিডিও তার নয়, ‘এডিট’ করা।
ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদে। ‘নৌকায় সিল মেরে দেখাতে হবে, নইলে ঢুকতে দেওয়া হবে না’ বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন- রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ। রোববার (২ জানুয়ারি) বিকেলে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলেন নির্বাচন কর্মকর্তা। সোমবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলের মধ্যেই তার লিখিত জবাব দেন ওই প্রার্থী।

এর আগে শুক্রবার (১ জানুয়ারি) রাতে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে আবুল কালাম আজাদ এই ঘোষণা দেন।

ওই চেয়ারম্যান প্রার্থীর দেওয়া বক্তৃতার ১ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে ওই প্রার্থী বলেন, ভোটকেন্দ্রে গেলে নৌকায় সিল মেরে দেখাতে হবে। নইলে ভোটের মাঠেই ঢুকতে দেওয়া হবে না। যদি তা না পারা যায়, তবে তাদের তালিকা করার জন্য কর্মীদের নির্দেশও দেন তিনি।

এ ঘটনায় শোকজ নোটিশে আবুল কালাম আজাদকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছিল- ‘আপনার এই বক্তব্যের মাধ্যমে ভোটারদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছেন। আপনার বক্তব্যটি নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এ অবস্থায় কেন আপনার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা-২০১৬ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। পত্রপ্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো। ’

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী রোববার বিকেলে এই বিষয়ে অভিযোগ দেন। এরপর বিষয়টি তাদের নজরে আসে। পরে রোববার বিকেল ৫টায় নৌকার প্রার্থীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। আজ সোমবার বিকেল পাঁচটার মধ্যেই তার কারণ দর্শানোর লিখিত জবাব দিয়েছেন ওই প্রার্থী। এতে তিনি দাবি করেছেন ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওর বক্তব্যটি এডিট করা। এখন একদিন পরই নির্বাচন। আর তিনি যেহেতু লিখিতভাবেই কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিয়েছেন এবং বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। সেহেতু আপাতত তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে, পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আগামী ৫ জানুয়ারি রাজশাহীর পুঠিয়ায় বেলপুকুর ও বানেশ্বরে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ওই প্রার্থী ছাড়াও আনারস প্রতীক নিয়ে বানেশ্বরে স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিএনপি সমর্থিত) আবদুল রাজ্জাক ও হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মামুনুর রশিদ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *