দেশের বস্তিবাসীদের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি বেশি: গবেষণা

Slider জাতীয়


দেশে সাধারণ পরিবেশে বসবাসকারী মানুষের তুলনায় বস্তিতে বাসকারী জনগোষ্ঠীর শরীরে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি বেশি পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) এর গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় অ্যাডভোকেসি সহায়তায় ছিল হেলথ ওয়াচ বাংলাদেশ।

২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা এবং চট্টগ্রামের বস্তি ও বস্তিসংলগ্ন এলাকায় বসবাস করেন এমন মানুষদের মধ্যে এ সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। এর মধ্যে ঢাকার ৪টি (কড়াইল, মিরপুর, ধলপুর ও এরশাদ নগর) ও চট্টগ্রামের দুটি (শহীদ লেন এবং আকবর শাহ কাটা পাহাড়) বস্তি জিরিপের জন্য বেচে নেওয়া হয়েছিল। ঠিক একই সময়ে দুই শহরে বস্তি ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় চালানো হয়েছিল সমীক্ষা। দৈবচয়নের ভিত্তিতে সমীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। অর্থাৎ বাড়ি বাছাই কিংবা মানুষ বাছাই সব ক্ষেত্রে এই দৈবচয়ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে যেসব ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তাদের বয়স ১০ বছর কিংবা তার বেশি।

সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ব্যক্তির উচ্চতা, ওজন এবং রক্তচাপ পরিমাপ করা হয়েছিল ও তাদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। কোভিড-১৯ ভাইরাস, রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি), হিউম্যান করানো ভাইরাস (এইচকভ-এইচকেইউ-১), ইনফ্লুয়েঞ্জ ভাইরাস বি, প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, ডেঙ্গু ভাইরাস, চিকনগুনিয়া ভাইরাসের এন্টিবডি এই ব্যক্তিদের শরীরে ছিল কিনা তাও পরীক্ষা করা হয়েছিল। এছাড়া রক্তে ভিটামিন ডি ও জিংকের মাত্রাও পরীক্ষা করা হয়েছিল।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তিসংলগ্ন এলাকার ৬২ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ এবং বস্তিতে বসবাসকারী ৭১ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি বহন করছেন। এরমধ্যে ঢাকায় ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ বস্তিবাসী ও চট্টগ্রামের ৫৪ দশমকি ২ শতাংশের শরীরে কোভিড-১৯ এর অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। কোনো ব্যক্তির রক্তে অ্যান্টিবডি থাকার অর্থ হলো, তিনি পূর্বে সংক্রমিত হয়েছিলেন বা ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এর প্রতিক্রিয়া হিসাবেই তার শরীরের রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে। গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তি ও বস্তিসংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী মানুষের ওপর জরিপ চালায় আইসিডিডিআরবি। এলাকাগুলোর মধ্যে ঢাকার চারটি বস্তি-কড়াইল, মিরপুর, ধলপুর ও এরশাদ-নগর এবং চট্টগ্রামের দুটি বস্তি শহীদ লেন ও আকবর শাহকাটা পাহাড় রয়েছে। সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, নিম্ন আয়ের ব্যক্তিদের শরীরে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে। যারা নিয়মিত হাত ধুয়ে থাকেন, মুখে কিংবা নাকে হাত দেন না, বিসিজি টিকা নিয়েছেন এবং মধ্যমানের কায়িক পরিশ্রম করেন এমন ব্যক্তিদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *