একদিকে শামীম, অন্যদিকে আইভী : দ্বিধায় নারায়ণগঞ্জ আ. লীগ

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নিয়ে পেরেশানিতে পড়েছে আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচন শুধু নয়, পুরো নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতেই আওয়ামী লীগ দ্বিধা বিভক্ত। একদিকে শামীম ওসমান, অন্য দিকে সেলিনা হায়াৎ আইভী।

দলীয় প্রার্থী আইভির পাশে নেই জেলা ও মহানগরের বেশিরভাগ নেতা। এরমধ্যেই রোববার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক এস এম আকরাম স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারের পক্ষে সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণা নতুন চমকের সৃষ্টি হয়েছে।

এ অবস্থায় সোমবার জেলার নেতাদের ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এদিন সকাল ১১টায় ধানমন্ডি কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। এর আগে তিনি নারায়ণগঞ্জের নেতাদের কথা শুনবেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন তদারকি করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জের নেতাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত জানান, সোমবার সকাল ১১টায় আমাদের থাকতে বলা হয়েছে। এখানে জেলা আওয়ামী লীগ ও মহানগরের নেতারা থাকবেন। একই সাথে দুটি কমিটিতে থাকা এমপিরাও উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীও থাকবেন।

দলের একাধিক নেতা জানান, প্রধানমন্ত্রী হয়তো নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় নেতাদের কথা শুনবেন। তিনি কথা শোনার পর দিক নির্দেশনা দিবেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক আইভীর হাতে তুলে দেয়ার পর এখন পর্যন্ত মাঠে নামেনি মনোনয়ন বঞ্চিত আওয়ামী লীগের তিন নেতা জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল, মহানগরের সহ-সভাপতি চন্দন শীল ও সেক্রেটারি খোকন সাহা।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে এমপি নজরুল ইসলাম বাবুসহ অন্যরা ইতোমধ্যে সভা করেছেন। সভা হয়েছে মহানগরের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বেও। কিন্তু আইভী বিরোধী গ্রুপ এখনো তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেনি।

এসব কারণে নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন এবার সহজ হচ্ছে না মনে করছেন দলের নেতারাও। খোদ আইভীও বলছেন নির্বাচন এবার কঠিন হবে।

এর আগে ২০১১ সালের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন শামীম ওসমান ও আইভী। ওই সময়ে আওয়ামী লীগ সমর্থন দেন শামীম ওসমানকে। কিন্তু নির্বাচনে হেরে যান শামীম ওসমান। জিতে যান আইভী। ওই নির্বাচনের আগেও প্রধানমন্ত্রী সকলকে নিয়ে একাধিকবার বসলেও সুরহা হয়নি। পরে ২০১৬ সালের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকায় নৌকা তুলে দেয়া হয় আইভী। আর ধানের শীষ পান সাখাওয়াত হোসেন খান। ওই নির্বাচনের আগেও নারায়ণগঞ্জের নেতাদের ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও তখন মেয়র প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন আনোয়ার হোসেন। পরে প্রধানমন্ত্রী আইভীকে নৌকা তুলে দিয়ে জেলা পরিষদের আনোয়ার হোসেনকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেন।

স্থানীয়রা বলছেন, নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান ও আইভীর বিরোধ যেন কিছুতেই মীমাংসা হওয়ার নয়। ফলে দুজন দুই মেরুতে অবস্থান করছেন এবং যখনই কোনো নির্বাচন আসে তখনই এই দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান আওয়ামী লীগকে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে। এবারো সেই পরিস্থিতি তৈরি হতে যাচ্ছে বলেই বিভিন্ন মহল শঙ্কা প্রকাশ করছেন এবং এরকম পরিস্থিতির যদি এবার হয় তাহলে আওয়ামী লীগের জন্য সেটি একটি দুঃসংবাদ বয়ে আনতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

জানা যায়, নির্বাচনী আলাপ আলোচনার শুরু থেকেই আবু হাসনাত মো: শহীদ বাদল আইভীর মনোনয়নের বিরোধিতা করে আসছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *