জোয়ারের মতো ওমিক্রন ঢেউ আসন্ন বলে রোববার দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এই ঢেউ থেকে বাঁচতে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের বুস্টার ডোজ দেয়ার টার্গেট নির্ধারণ করেছেন তিনি। সে অনুযায়ী এক মাসের মধ্যে অর্থাৎ ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ এই টিকাদান সম্পন্ন করতে চান। রোববার তিনি টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে এ কথা বলেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে শঙ্কায় পুরো বিশ্ব। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এর মধ্যেই ওমিক্রন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। রবিবার সন্ধ্যায় এক টেলিভিশন বিবৃতিতে তিনি এ ঘোষণা দেন।
বরিস জনসন বলেন, কারো সন্দেহ থাকা উচিত নয় যে, ওমিক্রনের একটি জোয়ারের মতো ঢেউ এগিয়ে আসছে। করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনে বৃটেনে দ্রুতগতিতে সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধিতে দেশটির মেডিকেল উপদেষ্টারা কোভিড এলার্ট লেভেল বৃদ্ধি করেছেন। এরপরই জনসন ভাষণে এসব কথা বলেন। অভিযোগ আছে গত বছর বড়দিনে করোনা ভাইরাসের বিধিনিষেধ অমান্য করেছিলেন বরিস জনসন ও তার স্টাফরা।
এমন চাপের মুখে তিনি করোনা ভাইরাসের রূপান্তরিত রূপকে ‘ইমার্জেন্সি’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কারণ, প্রতি দুই থেকে তিন দিনে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুন হচ্ছে। এদিকে ইঙ্গিত করে জনসন বলেন, আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে যে, কিভাবে সূচকীয় গতিতে এই সংক্রমণের কার্ভ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে।
শুধু রোববার বৃটেনে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে ১২৩৯। এর প্রেক্ষিতে কোভিড এলার্ট লেভেল তিন- চার লেভেল থেকে ৫ম লেভেলে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। সব মিলে বৃটেনে ওমিক্রনে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ৩১৩৭। শনিবার আক্রান্তের মোট সংখ্যা ছিল ১৮৯৮। ফলে মাত্র একদিনে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৬৫ ভাগ।
বৃটেন এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে দেয়া বিধিনিষেধ শিথিল করে জুনে। এ সময়ে এলার্ট লেভেল ছিল তৃতীয় পর্যায়ে। এর অর্থ এই মহামারি সাধারণ অবস্থায় রয়েছে। চতুর্থ লেভেলের অর্থ হলো সংক্রমণ উচ্চ পর্যায়ে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ পড়েছে। ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ।
ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের চারজন প্রধান মেডিকেল অফিসার বলেছেন, বৃটেনের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির পরামর্শে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। তারা আরো বলেছেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এরই মধ্যে কমিউনিটি পর্যায়ে উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। বিশেষ করে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণও লক্ষণীয়। ওমিক্রন ইস্যুতে জরুরি অবস্থার অর্থ হলো অতিরিক্ত এবং দ্রুত ঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে জনজীবন এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, প্রাথমিক তথ্যে দেখা যাচ্ছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে দ্রুতগতিতে বিস্তার লাভ করছে ওমিক্রন।