রাতুল মন্ডল নিজস্ব প্রতিবেদক: নিজ যোগ্যতার বাংলাদেশ পুলিশী নিয়োগে ৭টি দাপ পেরিয়ে উত্তীর্ণ হলেও এক খণ্ড জমির জন্য চাকুরী পাচ্ছে না বরিশাল জেলার সরকারি হিজলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করা মেধাবী আসপিয়া ইসলাম।
আসপিয়া ইসলাম বরিশাল জেলার খুন্না গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত শফিকুল ইসলামের মেয়ে। সে ১৫ বছর ধরে উপজেলার খুন্না-গোবিন্দপুর গ্রামের একজনের জমিতে আশ্রিত হিসেবে থাকছে। পরিবারে মা, তিন বোন ও এক ভাই। ভাই পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তার আয় দিয়েই চলে আসপিয়াদের সংসার।
এমন খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে নিজে জমি লিখে দেয়ার কথা জানিয়েছেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের মৃত কফিল উদ্দিন মেম্বারের ছেলে মো. মেজবা উদ্দিন। তিনি বলেন, জমি লিখে দিলে যদি চাকুরী পায় তাহলে আমি জমি লিখে দিবো। নিজস্ব খরচে আসপিয়া ইসলামকে জমি লিখে দেয়ার কথা জানান। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্বর্তন কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
জানাযায়, বরিশাল জেলায় পুলিশ কনস্টেবলের শূন্য পদে লোক নিতে সেপ্টেম্বরে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। অনলাইনে আবেদন করলে গত ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর জেলা পুলিশ লাইনে শারীরিক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও উত্তীর্ণ হন। ২৪ নভেম্বর একই স্থানে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম হন আসপিয়া। ২৬ নভেম্বর জেলা পুলিশ লাইনে চিকিৎসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এতেও উত্তীর্ণ হন। সবশেষ ২৯ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ লাইন হাসপাতালে চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। সেখানেও উতরে যান আসপিয়া। চূড়ান্ত নিয়োগের আগে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আসপিয়া ও তার পরিবারকে ‘ভূমিহীন’ উল্লেখ করা হয়। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার বরাবর প্রতিবেদন জমা দেন হিজলা থানার উপ-পরিদর্শক মো. আব্বাস। এর আগে ভূমিহীন হওয়ায় (স্থায়ী ঠিকানা না থাকায়) আসপিয়ার চাকরি হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
বরিশাল পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, এক্ষেত্রে আপাতত কোন মন্তব্য করার সুযোগ নেই। আসপিয়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত ভালো করে তদন্ত হয়নি। কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারিনি। এজন্য এবিষয়ে কোন ধরনের মন্তব্য করা যাচ্ছে না।