আবারও রিভিউ না নেওয়ার হতাশায় পুড়ছে বাংলাদেশ

খেলা

আধুনিক ক্রিকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে যথাযথ রিভিউ নেওয়ায় যে একপ্রকার স্কিল- তা হয়তো এখনও বুঝতে পারছে না বাংলাদেশ দল। কখনও ভুলভাল রিভিউ নেওয়া, আবার কখনও রিভিউ একদমই না নেওয়া- এ দুইয়ের মাঝেই বন্দী বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল হক।

এর খেসারত দিতে হয় প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের বড় ইনিংস খেলতে দেখার মাধ্যমে। চলতি ঢাকা টেস্টেও দেখা গেলো সেই চিত্র। ম্যাচের প্রথম সেশনে অতি উৎসাহে দুইটি রিভিউ নষ্ট হওয়ায়, আজ বেঁচে থাকা একমাত্র রিভিউ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতাই অবলম্বন করলো বাংলাদেশ দল।

সেটিই কাল হয়ে দাঁড়ালো। দিনের শুরুতেই দুই উইকেট তুলে নেওয়ার পর আরেকটি উইকেটের সুযোগ এলেও, রিভিউ না নেওয়ার মাশুলই দিতে হচ্ছে মুমিনুলদের। বাংলাদেশের রিভিউ না নেওয়ার পূর্ণ সুবিধা লুটে নিয়েছেন পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ব্যাটার ফাওয়াদ আলম।

বৃষ্টির লুকোচুরির মাঝে চলমান ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৪২ রান। এখানে উইকেটের ঘরের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারতো ঠিকঠাক রিভিউ নিলেই। তা না নেওয়ায় ১৯ রানে অপরাজিত রয়ে গেছেন ফাওয়াদ, মোহাম্মদ রিজওয়ান খেলছেন ২৬ রানে।

ভেজা আউটফিল্ডের কারণে নির্ধারিত সময়ে প্রায় ৮০ মিনিট পর সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে শুরু হয়েছে আজকের খেলা। দিনের দশম বলেই আঘাত হেনেছেন এবাদত। উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠিয়ে দিয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার আজহার আলিকে।

দ্বিতীয় দিন শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল ৬৩.২ ওভারে ২ উইকেটে ১৮৮ রান। তৃতীয় দিন মাঠে গড়ায়নি একটি বলও। আজ খালেদের অসমাপ্ত ওভার দিয়ে শুরু হয় চতুর্থ দিনের খেলা। ওভারের বাকি থাকা চার বলে কোনো রান দেননি খালেদ।

পরের ওভারে স্বাভাবিকভাবেই আক্রমণে আনা হয় আরেক পেসার এবাদতকে। তার ওভারের দ্বিতীয় বলে দিনের প্রথম রান নেন বাবর। পরের বলেই স্কয়ার লেগ দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকান আজহার।

ওভারের শেষ বলে আবার বাউন্ডারির আশায় পুল করেন পাকিস্তানের তিন নম্বর ব্যাটার। কিন্তু বল উঠে যায় আকাশে। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে সহজেই সেটি গ্লাভসবন্দী করেন লিটন। ফলে বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় ৫৬ রান করা আজহারের।

দুই ওভার পর আরেক সেট ব্যাটার বাবরের বিদায়ঘণ্টা বাজান খালেদ। ইনিংসের ৬৮তম ওভারটিতে অসম বাউন্সে বাবরকে বারবার অস্বস্তিতে ফেলছিলেন খালেদ। ওভারের পঞ্চম বলে তার ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি আঘাত হানে বাবরের প্যাডে, আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার।

বল লেগস্ট্যাম্প দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে ভেবে রিভিউ নিয়েছিলেন পাকিস্তানি অধিনায়ক। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় লেগস্ট্যাম্পেই আঘাত হানতো বল। তাই বদলায়নি সিদ্ধান্ত, ৭৬ রানে সাজঘরে ফিরতে হয় বাবরকে। যা কি না খালেদের ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট।

এরপর প্রথম সেশনের বাকি ১৫ ওভারে আর বিপদ ঘটতে দেননি রিজওয়ান ও ফাওয়াদ। অথচ বাবরের বিদায়ের পাঁচ ওভারের মধ্যেই সাজঘরে ফিরতে পারতেন বাঁহাতি ব্যাটার ফাওয়াদ। এবাদতের বলে ফাওয়াদের ব্যাটের নিচের কানায় লেগে জমা পড়ে লিটনের গ্লাভসে।

কিন্তু সেটি যেনো বুঝতেই পারেননি বোলার, উইকেটরক্ষক কিংবা অন্য ফিল্ডাররা। লিটন আলতো আবেদন করলেও সেটিতে কোনো জোর ছিল না, আম্পায়ারও আউট দেননি। আর রিভিউ নেওয়ার কথাও ভাবেননি মুমিনুল। ফলে ১২ রানেই একপ্রকার জীবন পেয়ে যান ফাওয়াদ।

এরপর রিজওয়ানকে প্রায় আউটই করে ফেলেছিলেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ইনিংসের ৮০তম ওভারে লেগ বিফোরের আঙুল তুলে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। কিন্তু রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচান পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটার রিজওয়ান। এর আগে ৭১তম ওভারেও এবাদতের বলে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি।

সুযোগ পেয়ে বেঁচে যাওয়ার আগে-পরে ফাওয়াদ ও রিজওয়ান মিলে পঞ্চম উইকেটে যোগ করে ফেলেছেন ৪৫ রান। ম্যাচের বাকি আছে আর মাত্র পাঁচ সেশন। এখনও চলছে প্রথম ইনিংসের খেলা। কোথায় পৌঁছে ইনিংস ঘোষণা করবে পাকিস্তান, সেটিই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *