বদরুন্নেসার শিক্ষার্থীকে ঠিকানা বাসে লাঞ্ছিত ও ধর্ষণের হুমকি দেয়া সেই চালক ও তার সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রোববার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ঠিকানা বাসের চালক মো. রুবেল ও তার সহকারী মো. মেহেদী হাসান।
এর আগে শনিবার ঠিকানা পরিবহনের একটি বাসে অর্ধেক (হাফ) ভাড়া দিতে চাওয়ায় এক ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেয়ার অভিযোগ ওঠে বাসের কর্মচারীর বিরুদ্ধে। হেনস্তার শিকার শিক্ষার্থী রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। ঘটনা তুলে ধরে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন বদরুন্নেসার সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী। তিনি লেখেন, “আমার বাসা শনির আখড়া। এখান থেকে কলেজের (বকশী বাজার এলাকা) ভাড়া ১০ টাকা, প্রতিদিন ১০ টাকা দিয়েই যাচ্ছি।
আজ কলেজে যাওয়ার সময় ঠিকানা বাসে করে গিয়েছিলাম। হেলপারকে ২০ টাকার নোট দিলে সে ভাড়া রাখে ১৫ টাকা। আমি তাকে ভালো করেই বলছিলাম আমার ১০ টাকা ফেরত দিতে, বাট সে দেয় তো নাই উল্টো বলে ‘দিমু না কী করবি কর’। এরপর চিল্লানোর পর সে বলে ‘গলা বড় করবি না, পাঁচ টাকা নে, না হয় নাইমা যা’।
বাসের একটা মানুষও তাকে একটা কথা বলে নাই। কেউ কিচ্ছু বলে নাই। ইভেন একটা পুলিশও ছিল, সেও কিছু বলে নাই। এরপর নামার সময় পাঁচ টাকা হাতে ধরায় দিয়ে বলে, ‘নে তোর টাকা, প্রতিদিনই তো আসবি, একদিন ধইরা …. কোথাকার’। এই কথা যখন বলছে তখন বাস অলরেডি রানিংয়ে, আমি তাকে কিছু বলার সুযোগও পাইনি আর বাসের নম্বর নোট করারও সুযোগ পাইনি। জোরে বাস টেনে চলে গেছে।
এখন আমার কথা হচ্ছে প্রতিদিন বাসের এমন ভোগান্তিতে পড়া লাগে। আমাদের ওঠায় না। আমাদের এখান থেকে প্রতিদিন অনেক মেয়ে যায় কলেজে। আমরা যদি এখন কিছু না বলি সামনে আরও প্রব্লেমে পড়তে হবে। ঠিকানা, মৌমিতা আমাদের কলেজের সামনে দিয়েই যায়। আমরা সবাই মিলে যদি একদিন রাস্তাটা ঠিকানা আর মৌমিতার জন্য বন্ধ করে দিই আমার মনে হয় এদের তেজ কমবে। আমি আশা করছি, এই কলেজের স্টুডেন্ট হয়ে আমার প্রতি এই আচরণের প্রতিবাদ তোমরা করবে।”
এ ঘটনার প্রতিবাদে ও শিক্ষার্থীদের জন্য বাসে হাফ ভাড়া নেয়ার বিধান কার্যকর করা এবং শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছনাকারী ঠিকানা পরিবহনের কর্মচারীকে গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। রোববার সকাল থেকে প্রায় ৪ ঘণ্টা বকশীবাজারে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১টার দিকে সড়ক থেকে সরে যান তারা। অবরোধ তুলে নেয়ার আগে তারা ৯টি দাবি উত্থাপন করেন।