সভায় যাওয়ার সময় আ’লীগ নেতার গাড়িবহর থেকে অস্ত্র উদ্ধার

Slider সারাদেশ


পাবনা: পাবনার সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহীনের গাড়িবহর থেকে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে মাইক্রোবাসের চালক মো: হাবিবুল্লাহকে (৪০)।

উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে একটি হলো অবৈধ ওয়ান শুটারগান অপরটি হলো একজন মুক্তিযোদ্ধার নামে লাইসেন্স করা শটগান। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার রানীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভা শেষে অস্ত্র দু’টি জব্দ করা হয়।

শনিবার সকালে আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আটক হাবিবুল্লাহ পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের কাঁচিপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সালাম শেখের ছেলে।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার ছিল সুজানগর উপজেলার রানীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভা। সুজানগর পৌর সদর থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শাহিনুজ্জামান শাহীন গাড়িবহর নিয়ে ওই বর্ধিতসভায় যান। সভা শেষে সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীদের গাড়িরবহর উপজেলার দিকে রওনা দেয়। এ সময় পুলিশ বহরের একটি গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি ওয়ানশুটার গান এবং একটি শটগান উদ্ধার করে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, সুজানগর উপজেলার ১০ ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বাইরে প্রতিটি ইউপিতে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। সব ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীরা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহিনের সমর্থক।

মাইক্রোবাসের চালকের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ আরো জানায়, বর্ধিতসভায় নিয়ে যাওয়া একটি মাইক্রোবাসে কয়েকজন কর্মী সমর্থক নিয়ে যান সুজানগর পৌরসভার কাউন্সিলর জায়েদুল হক জনি (৩৫)। জনি মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন তোফার ছেলে।

গাড়ির মালিক উজ্জ্বল হোসেন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনের নামে চারটি গাড়ি ভাড়া দেয়া হয়েছিল। গাড়ির মধ্যে যদি তারা অস্ত্র রাখে সেক্ষেত্রে চালকের কিছু করার থাকে? আটক চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে যারা অস্ত্র গাড়িতে রেখেছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

গোপন সূত্রে আমিনপুর থানা পুলিশের কাছে খবর যায়, জনির তত্ত্বাবধানে গাড়িবহরের একটি মাইক্রোবাসে অস্ত্র রাখা হয়েছে। খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ভাটিকয়া বাজারে সন্ধ্যায় ওই মাইক্রোবাসে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র দু’টি উদ্ধার করে। কিন্তু জনিকে পুলিশ ধরতে পারেনি। এ সময় মাইক্রোবাসের চালক হাবিবুল্লাহকে আটক ও মাইক্রোবাসটি জব্দ করে পুলিশ।

ওসি আরো বলেন, মালিক ছাড়া অন্য কেউ তার লাইসেন্স করা অস্ত্র এভাবে নিয়ে যেতে পারে না।

সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহীন বলেন, একটি বর্ধিতসভায় অনেক নেতাকর্মী ও গাড়িবহর ছিল। কে কী অবস্থায় ছিলেন সেটা আমার জানার কথা নয়। তাছাড়া অস্ত্র উদ্ধারের কথা আপনাদের কাছ থেকেই আমি জানলাম। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষের লোকজন হিংসাত্মকভাবে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা ও মনগড়া নাটক সাজানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, অস্ত্রের মালিকও আমি না, অস্ত্র নেয়ার বিষয়টিও আমি জানি না।

সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব বলেন, উপজেলার বেশিরভাগ ইউনিয়নে শাহিনুজ্জামানের নিজস্ব লোক মনোনয়ন না পাওয়ায় প্রতিটি ইউনিয়নে তিনি স্বতন্ত্রপ্রার্থী দিয়েছেন। নিজে নেতৃত্ব দিয়ে এসব ইউনিয়নে নৌকার ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।

আমিনপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী শনিবার সকালে জানান, গাড়ির ভেতর থেকে একটি বৈধ আর একটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় হাবিবুল্লাহ নামে এক চালককে আটক করা হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা রোধে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *