রাজধানীর বাড্ডায় ট্রাফিক পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া পাঠাও চালক শওকত আলীকে মোটরসাইকেল উপহার দিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। গতকাল বুধবার রাতে শওকত আলীর বাসায় গিয়ে বাজাজ-১২৫ সিসির ডিসকভার মোটরসাইকেলের চাবি তার হাতে তুলে দেন তিনি।
শওকত আলীর বাইক পোড়ানোর ভিডিওটা দেখে নিজের কাছে খুব খারাপ লেগেছিল এবং মানবিক জায়গা থেকেই তাকে মোটরসাইকেলটি উপহার দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, ‘শওকত আলী আবারও এই মোটরসাইকেল দিয়ে রাইড শেয়ারিং করবে।’ টিম পজিটিভ বাংলাদেশ (টিপিবি) এর পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে মোটরসাইকেলটি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাব্বানী।
ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, ‘মহামারিতে অনেক মানুষ অসহায় জীবন-যাপন করছেন। শওকত অনেক ভালো পরিবারের ছেলে। কিন্তু এই সময় পরিবারের হাল ধরতে পাঠাও অ্যাপের মাধ্যমে মোটরবাইক চালানোর কাজ শুরু করেন। একটা মানুষ কতটা কষ্ট পেলে, কতটা অসহায়ত্ব তাকে গ্রাস করলে ক্ষোভে-দুঃখে উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন, মোটরসাইকেলটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়, মানবিক হৃদয় দিয়ে সেটা সবাইকে অনুধাবন করা উচিত।
নিজের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন শওকত আলী। পুরোনো ছবি
এর আগে গত সোমবার রাজধানীর বাড্ডা লিংক রোডে যাত্রীর অপেক্ষায় ছিলেন শওকত। এ সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট এসে তার কাগজপত্র নিয়ে যায়। মামলা না দিতে অনুরোধ করে পুলিশের কাছে গাড়ির কাগজপত্র ফেরত চান তিনি। কাগজপত্র ফেরত না পেয়ে হতাশ হয়ে মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। জানা যায়, বারবার মামলা দেওয়ায় নিজের মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শওকত আলী। এর আগেও ওই মোটরসাইকেলটিকে একটি মামলা দেওয়া ছিল। কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় পুলিশ ফের মামলা দেওয়ায় মনের কষ্টে এ কাণ্ড ঘটান শওকত।
ওই ঘটনায় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে শওকত বলেন, ‘আমার নিজের ইচ্ছায়ই গাড়ি (মোটরসাইকেল) জ্বালাইছি। এতে তো আমারই ক্ষতি হলো। রাগ করতে গিয়ে নিজের গাড়িই জ্বালিয়ে দিলাম। পুলিশের কোনো দোষ নেই। আমি কেরানীগঞ্জে ব্যবসা করতাম। দেড় মাস ধরে পাঠাও চালাই। গত সপ্তাহেও আমাকে একটা মামলা দেওয়া হয়েছিল। আজ (সোমবার) ট্রাফিক পুলিশ আবারও মামলা দিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।’