শীতলক্ষ্যায় পুলিশের নৌকা ডুবিয়ে দিল যুবকরা, ২ নারীসহ গ্রেফতার ১৬

Slider বাংলার মুখোমুখি


গাজীপুর: গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ট্রলারে মেয়ে নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করার অভিযোগে আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে পুলিশের টহল দল। হামলাকারীরা পুলিশ সদস্যদের মারধর করে তাদের নৌকা মাঝ নদীতে ডুবিয়ে দেয়। এতে প্রাণে বেঁচে গেলেও এসআইসহ পুলিশের চার সদস্য ও নৌকার মাঝি আহত হয়েছে। এ ঘটনায় পরে দুই নারীসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার কাপাসিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- শফিকুল ইসলাম, মাহবুব আলম, মো: রাসেল, মো: মারুফ, ইমরান, ইমন, মো: মেহেদী, মো: সুমন, মো: মুরাদ, মো: মাসুম, মো: ইমরান, নিহাদ মোল্লা, সোনিয়া, মুক্তা, মিলন ও সাগর। শেষের দু’জন ছাড়া সবার বয়স ১৮ বছরের মধ্যে। সবার বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা ও নারায়াণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায়।

পুলিশ কর্মকর্তা পুলিশ মনিরুজ্জামান খান জানান, গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে কমপক্ষে ৪৩-৪৫ জনের একদল লোক বুধবার ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে নৌ ভ্রমণে বের হন। তারা পাশের গফরগাঁও ও শ্রীপুর উপজেলার বরমী এলাকার নৌপথ ঘুরে রাত ১০টার দিকে কাপাসিয়ার শীতলক্ষ্যা হয়ে ফিরছিলেন। তাদের সাথে দু’জন নারী নৃত্যশিল্পী ছিলেন। নৌযানে উচ্চস্বরে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে নেচে গেয়ে ডিজে পার্টি অনুষ্ঠিত হয় নদীতে।

তিনি আরো জানান, চুক্তি অনুযায়ী ফেরার পথে পারিশ্রমিক না দেয়ায় নৃত্যশিল্পীদের সাথে যুবকদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নৃত্যশিল্পীরা ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) ফোন দিয়ে শ্লীলতাহানি থেকে তাদেরকে রক্ষা করতে পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানার এসআই সাজ্জাদ আলমের নেতৃত্বে পুলিশের চার সদস্যের একটি দল নৌকা নিয়ে কাপাসিয়ার সাফাইশ্রী এলাকায় নৌভ্রমণকারীদের নৌযানের কাছে পৌঁছে। এ সময় ভ্রমণকারী যুবকরা নৌযান থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে পানীয়ের খালি বোতল নিক্ষেপ শুরু করে। একপর্যায়ে তারা পুলিশের নৌকার মাঝি রফিকুল ইসলামকে (৪৫) বেধড়ক মারধর করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় হামলাকারীদের নৌকার পিছু নেয় পুলিশের নৌকা। কিছু দূর যাওয়ার পর যুবকরা তাদের নৌকা দিয়ে পুলিশের নৌকাকে ধাক্কা দিয়ে মাঝ নদীতে ডুবিয়ে দেয়। পুলিশের সদস্যরা আশপাশের নৌমাঝিদের সহায়তায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ কোনোরকমে তীরে উঠে প্রাণে বেঁচে যান। এ সময় পুলিশ সদস্যদের সাহায্যের জন্য ট্রিপল নাইনে ফোন করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানা পুলিশের অপর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই নারীসহ ১৪ জনকে আটক করে। অন্যরা পালিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার পুলিশ স্থানীয় নাকাসিনি ঘাট এলাকা থেকে যুবকদের নৌকার মাঝি মিলন (৪৫) ও হেলপার সাগরকে (৩০) আটক করে। এ ঘটনায় গ্রেফতারদেরসহ ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে কাপাসিয়াা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান খান আরো জানান, পুলিশের আহত এসআই সাজ্জাদ আলম, কনস্টেবল আরশেদ, মোঃ ইসমাইল ও আল-আমিনকে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত পুলিশের ট্রলারের মাঝি রফিকুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *