বিধিতে ব্যাধি, ক্ষুধার্থের সংখ্যা বেসামাল!

Slider জাতীয় বাংলার মুখোমুখি


ইসমাইল হোসেন, গাজীপুরঃ অতি সম্প্রতি অতিমারি করোনায় বিধ্বস্থ হয়েছে বিশ্ব। সেই কারনে দিশেহারা বাংলাদেশ। পরিসংখ্যান বলছে, করোনায় আড়াই কোটি নতুন গরিবের জন্ম হয়েছে। ফলে বর্তমানে গরিবের সংখ্যা ৭ কোটি প্রায়। চলতি অর্থ বছরে ঘোষিত বাজটে নতুন গরিবদের কোন স্থানই দেয়া হয়নি। আগের ও বর্তমান গরিব মিলে একাকার হয়ে প্রায় সাত কোটি মানুষ বাঁচার জন্য আমরণ সংগ্রামে লিপ্ত। এই অবস্থায় অতিমারি করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখলেও তৃণমূল গরিব মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে না। করোনা প্রতিরোধে সরকারের নানামূখি পদক্ষেপের মধ্যে কিছু পদক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তৃণমূল গরিব মানুষ।

গার্মেন্টস খোলা রেখে কথিত লকডাউন । গণ পরিবহন বন্ধ করে চলছে লকডাউন। জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিক্ষা থেকে বঞ্চিত প্রায় দেড়বছর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারনে শিক্ষার আলো নিভু নিভু জ্বলে। প্রিয় সন্তানদের শিক্ষিত করে তোলার প্রয়াস ঝুঁকির মধ্যে চলমান রাখতে গিয়ে অভিভাবকেরা হেনাস্তার শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় শিক্ষকতা না থাকায় ক্ষুধার্থ ও দিশেহারা লাখ লাখ শিক্ষক এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

বাস্তবতা বলছে, ক্ষুধার্থ শিক্ষক রিকশা চালাচ্ছেন, রাজমিস্ত্রির কাজ করছেন, ফুটপাতে দোকানদারী করছেন। এমনকি হকারীও করছেন শিক্ষকেরা। মাঝে মাঝে স্ত্রী সন্তানদের ক্ষুধার আর্তচিৎকার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হওয়ায় কিছু কিছু শিক্ষক বে-আইনিভাবে শিক্ষকতা করতে গিয়ে দন্ডিত হচ্ছেন। কখনো কখনো দন্ডের বিপরীতে জরিমানা পরিশোধে অনেকটা ভিক্ষাবৃত্তির আশ্রয়ও নিচ্ছেন ।
আজ সোমবার শুরু হয়েছে তিনদিন ব্যপি বিধিনিষেধ। গতকাল সরকার ঘোষিত এই প্রজ্ঞাপনে রিকশা চলাচলের অনুমতি দিলেও অটো রিকশা বা অটো ভ্যান চলাচল করতে পারছেনা । যুগের আধুনিকায়নে পায়ে ঠেলা রিকশা বিদ্যুৎ চালিত রিকশায় রুপান্তিরিত হওয়ায় বর্তমানে পায়ে ঠেলা রিকশার সংখ্যা খুবই কম। ফলে রিকশা চলবে বলে সরকারি ঘোষনায় সকল রিকাশা চালক সমানভাবে সুবিধা ভোগ করতে পারছে না। সরকারের একই খাতে বৈষম্যনীতি তৃণমূল মানুষকে আরো ঝুকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

ধারনা করা হচ্ছে, আগত দিনে বড় ধরনের শাটডাউন হলে সামগ্রিকভাবে রিকশা চালকেরা বাঁচার জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে। এদিকে করোনার প্রণোদনা প্যাকেজে বে-সরকারি শিক্ষক, দিন মজুর, কৃষক, পরিবহন শ্রমিক, নির্মান শ্রমিক, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, গার্মেন্টস শ্রমিক, সাংবাদিক সহ বেশ কয়েকটি সেক্টর অধিভূক্ত না হওয়ায় সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সরকার বিচ্ছিন্নভাবে উল্লেখিত সেক্টরের মধ্যে কিছু কিছু প্রণোদনা দিলেও অধিকাংশই যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছেনা।
ফলে অতিমারি করোনায় বিধ্বস্থ বাংলাদেশে আগত সময় অতীত সময় থেকে ভয়ানক হতে পারে এমন আশঙ্কা উড়ি
সাধারণ মানুষ বলছেন, করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে সরকারি সুযোগ সুবিধা সমূহ সমতার ভিত্তিতে যথাযথভাবে নিশ্চিত করলে মানুষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে, যা মহামারী নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *