রজব চন্দ্রের খুপরী ঘরের কষ্ট লাগবে এগিয়ে এলেন নারী সাংসদ

Slider গ্রাম বাংলা

রাতুল মন্ডল শ্রীপুর প্রতিনিধিঃ রজব কান্ত বর্মন সংসারে নানা শূন্যতার ভীরে অভাব হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে আসছিলেন যুগের পর যুগ।একটা সময় এসে ক্ষুধার যন্ত্রনার চেয়ে তীব্রতর হয়ে উঠছিল আশ্রয়ের অভাব। অর্ধশত বছর আগে তোলা ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে গিয়েছিল প্রায় এক যুগ আগে। এর পর ঘরের ছাউনিও ঝড়ে উড়ে যায়। গাছপালার পাতা দিয়ে কোন মতে একটি ঝরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করে আসছিলেন সন্তান নাতি নিয়ে ১০ সদস্যের পরিবার। তবে প্রতি বর্ষায় এই ঘরের কারনে যন্ত্রনার কান্না ছিল নিত্যদিনের সাথী। চলতি বর্ষায় শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তাই কান্না বাড়ছিল এই বৃদ্ধের।
গোসিংঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. সোহেল রানা নামে এক যুবক তাঁর নিজস্ব ফেসবুক টাইমলাইনে ২৯শে মে ২০২১ সালে এই পরিবারের মানবেতর জীবনযাপনে চিত্র তুলে ধরেন। এই সংবাদ দৃষ্টি গোচর হয় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা সংসদ অধ্যাপিকা রুমানা আলী টুসি এমপি’র। অধ্যাপিকা রুমানা আলী টুসি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রয়াত সাংসদ এড. রহমত আলী’র কন্যা।
সংবাদটি দৃষ্টি গোচর হওয়ার সাথে সাথে কেন্দ্রিয় কৃষকলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নারী সাংসদ নিজ অর্থে এই বৃদ্ধকে তৈরী করে দিয়েছেন একটি টিনের ঘর। আর এতেই আনন্দের কান্না ঝড়ছে রজব চন্দ্র বর্মনের দু’চোখ দিয়ে।
রজব চন্দ্র বর্মন গাজীপুরের শ্রীপুরের গোসিঙ্গা চাউবন এলাকার স্বগীয় রজনী চন্দ্র বর্মনের ছেলে। একটা সময় ছিল তার পূর্ব পুরুষের মালিকানায় ছিল শত শত একর জমি। যদিও সে পৃথিবীতে আসার পূর্বেই ভাগ্য সহায় না থাকায় জমি হাতছাড়া হয়ে যায়। তার ঠাঁই হয় সরকারী বন বিভাগের মালিকানার জমির উপর ছোট একটি খুপরী ঘরে। অভাবের সাথে আজন্ম যুদ্ধ করে জীবন অতিবাহিত করা রজনী অন্যের বাড়ীতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। দুই মেয়ের জন্ম হওয়ার পর স্ত্রী মারা যান। নিজে অনেক কষ্ট করে দুই মেয়েকে বড় করে বিবাহ দেন। সন্তানাদি হওয়ার পর বাবার কাছে রেখে মেয়ের জামাইরা চলে যান। বৃদ্ধ রজব চন্দ্রের ঘাড়ে পরে ১০জনের সংসারের বুঝা।
রজবের ভাষ্য মতে, দুই মেয়েকে ছেড়ে তাদের জামাই চলে গেছেন কয়েকবছর হলো। দুই মেয়ের সন্তান নিয়ে এখন তাকে ১০জনের সংসারের ঘানি টানতে হচ্ছে। বৃদ্ধ হয়েছেন কাজ করতে পারেন না। এক বেলা খেলে আর এক বেলা খেতে পারেন না। এর উপর বসবাসের ঘর জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় বর্ষায় দিন ও রাতে বৃষ্টিতে ভিজতে হতো। শুধু ঘরের কারনে কত রাত শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি। মধ্যরাতে পরিবারের ছোট সদস্যদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠতো। তবে এবার ঘর পাওয়ায় হয়তো শান্তিতে রাতের ঘুম ঘুমাতে পারবেন।

কেন্দ্রিয় কৃষকলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও নারী সাংসদ রুমানা আলী টুসি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি এলাকার অসহায় মানুষের খবর নিয়ে তাদের কষ্ট লাগবের চেষ্টা করে আসছেন। ফেসবুকের একটি পোস্ট আমার দৃষ্টি গোচর হওয়ার নিজ তহবিল থেকে একটি ঘর নির্মান করে দিয়েছেন। একটি সুখী, সমৃদ্ধ, সবুজ, শ্যামল, সোনার বাংলা বিনির্মানে তার এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *