আদালতে স্বীকারোক্তি দিলেন নারী পাচার চক্রের ‘বস রাফি’

Slider বাংলার আদালত


ভারতে নারী পাচারে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ঝিনাইদহের আশরাফুল ইসলাম ওরফে বস রাফি ও আবদুর রহমান শেখ। আজ মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিজিএম) আদালতে তারা জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

সূত্র বলছে, পাঁচ বছর যাবৎ ভারতে নারী পাচারে জড়িত থাকার কথা আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন আসামি আশরাফুল ইসলাম ও আবদুর রহমান। পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আশরাফুল ইসলাম, আবদুর রহমানসহ চারজনকে আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ। তবে এদের মধ্যে আশরাফুল ও আবদুর রহমান স্বীকারোক্তি দিলেও অপর দুইজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। তারা হলেন- সাহিদা বেগম ওরফে ম্যাডাম সাহিদা ও ইসমাইল সরদার।

এর আগে গত মঙ্গলবার ঝিনাইদহ ও যশোরের অভয়নগর ও বেনাপোল এলাকা থেকে আশরাফুল ইসলামসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাবগ্রেপ্তারের পর গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ভারতে নারী পাচার চক্রের মূল হোতা আশরাফুল ইসলাম আট বছর ধরে ভারতে যাতায়াত করেন। আর পাঁচ বছর ধরে ভারতে নারী পাচার করে আসছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফুল ইসলাম স্বীকার করেন, তিনি গত পাঁচ বছরে পাঁচ শতাধিক নারীকে বিভিন্নভাবে ভারতে পাচার করেছেন। টিকটকে মডেল হওয়ার কাজে ভারতে যাওয়ার প্রলোভন দেখালেও পাচার হওয়া নারীদের ভারতে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক মাদক সেবন করিয়ে এবং নাচ শিখিয়ে পতিতাবৃত্তির কাজে বাধ্য করানো হতো। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। প্রতারণার ফাঁদ পেতে তরুণীদের পাশের দেশ ভারতে পাচার করত এই চক্র।

তিনি আরও জানান, আশরাফুল আলমের সহযোগী টিকটক হৃদয় বাবু অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়ায় তরুণীদের মাধ্যমে একটি গ্রুপ তৈরি করেন। তরুণীদের মডেল বানানোর প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে তাদের প্রথমে আকর্ষণ করা হতো। পরে তাদের বিভিন্ন সুপার মার্কেট ও পাশের দেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে আশরাফুলের সহযোগিতায় বিদেশে পাচার করত ওই চক্র। টিকটক ভিডিও তৈরির ফাদে ফেলে তরুণীদের ভারতে পাচার করা হচ্ছে। সম্প্রতি ভারতে কয়েকজন মিলে এক বাংলাদেশি তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টির অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

ওই তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় রিফাদুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় নামে ঢাকার মগবাজার এলাকার এক বাসিন্দাকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। এই রিফাদুলই মেয়েটিকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর কথা বলে বছরখানেক আগে ভারতে নিয়ে যান বলে তার পরিবার জানায়। এ ঘটনায় রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *