মামুনুল হকের পক্ষে লাইভ, চাকরি হারালেন সেই পুলিশ কর্মকর্তা

Slider জাতীয়

হেফাজত ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হকের পক্ষে ফেসবুক লাইভে বক্তব্য দেওয়ায় কুষ্টিয়া পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) গোলাম রাব্বানীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পুলিশি তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৩ মে তাকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খায়রুল আলম এ তথ্য জানান।

চাকরি হারানোর পর গত বুধবার সাবেক এএসআই গোলাম রাব্বানীকে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পাশে দাঁড়িয়ে হ্যান্ড মাইক হাতে নিয়ে বক্তব্য প্রদান করতে দেখা যায়। তার বক্তব্যর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দিলে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। দাঁড়ি, মাথায় টুপি,পাঞ্জাবি-পায়জামা পরিহিত অবস্থায় ৫ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওর শুরুতেই দেখা যায় এএসআই গোলাম রাব্বানী র‌্যাব-পুলিশের বিরুদ্ধে ‘বিষোদগার’ করে বক্তব্য রাখছেন।

গোলাম রাব্বানী জনগণের উদ্দেশে করে বলেন, আল্লাহ তোমার জন্য যথেষ্ট। কোরআন হাতে নেন। র‌্যাব-পুলিশ সব দৌঁড় মারবে। দেখেন আপনারা আল্লাহকে ছুলে কি হয়? মুসলমানের কাছে দাঁড়ান। র‌্যাব-পুলিশ, এসপি কাউকে দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রকৃত মুসলিম কাউকে ভয় পায় না। মানুষকে মানুষ ভয় পাবে না। এই জান-মাল, ইজ্জত, ধর্ম, স্ত্রী, পুত্র-সন্তান সব বিসর্জন দেব আল্লাহর জন্য। পোশাক পড়ে কথা বলেছি, এটাও পোশাক, ওটাও পোশাক। চোরকে চোর বলা পুলিশের দায়িত্ব। ডাকাতকে ডাকাত বলা পুলিশের দায়িত্ব। আলেমকে আলেম বলা পুলিশের দায়িত্ব। আইন এগুলো মানুষের বানানো। রবের পক্ষ থেকে কোরআন নাজিল। সবাইকে কোরআন মানতে হবে। এই পোশাক আমার গায়ে ছিল। আমি কি এখন পুলিশ দাবি করছি? তিনদিন আগে আমার চাকরি চলে গেছে বলেও জানান তিনি।

গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে রিসোর্ট কাণ্ডের পর গোলাম রাব্বানী পুলিশের পোশাক পরে ফেসবুক লাইভে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে বক্তব্য দেন। পরে তার লাইভটি ভাইরাল হয়ে যায়। পরদিন ৪ এপ্রিল এএসআই গোলাম রাব্বানীকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. মুহিদ উদ্দিন বিষয়টি তদন্ত করার জন্য কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার কে নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপার জানান, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৩ মে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

সাবেক এএসআই গোলাম রাব্বানীর গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকায় বাসা ভাড়া থাকেন। তিনি কুষ্টিয়ার ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *