মেয়েকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ : মা ও ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বাবার মামলা

Slider নারী ও শিশু


ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে কিশোরীকে ধর্ষণ ও গর্ভপাত ঘটিয়ে হত্যার অভিযোগে নিহতের মা ও এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের বাবা। ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ২- এ মামলা দায়ের করা হয়।

গতকাল বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ জেলা ও জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘গত সোমবার আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার আদালত মামলাটি নথিভুক্ত করার জন্য ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন।

মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার ৯ নম্বর উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম শফিক (৪৮), তার বড় ভাই উচাখিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জুরুল হক মঞ্জু (৫২), নিহতের মা আছমা খাতুন (৪০), দুলাল মিয়া (৪০) ও মাহাবুবুল আলম (৪০)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চরআলগী গ্রামের কাঠমিস্ত্রি স্বপন মিয়া তার পরিবার নিয়ে উচাখিলা বাজারে বসবাস করে আসছিলেন। সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান শফিক যাতায়াত করতেন। চেয়ারম্যানকে বাসায় না আসার জন্যে নিষেধ করায় চেয়ারম্যানের পরামর্শে স্বামী স্বপনকে তালাক দিয়ে আসমা ও তার তিন মেয়েকে নিয়ে বাজারের সিডস্টোর ভবনে বসবাস শুরু করেন। সিডস্টোরের বাসায় চেয়ারম্যান নিয়মিত যাতায়াত অব্যাহত রাখেন।

এ সুযোগে স্বপনের স্ত্রীর আসমার সম্মতিতে দ্বিতীয় মেয়ে স্বর্ণাকে (১৬) বিয়ের প্রলোভন দিয়ে চেয়ারম্যান দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে কিশোরী স্বর্ণা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এতে আসামিরা বিপাকে পড়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওই কিশোরীকে কবিরাজী ওষুধ সেবন করান।

এতে অন্তঃসত্ত্বা স্বর্ণার ব্যাপক রক্তক্ষরণ শুরু হলে গত ৯ মে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার তাকে ঢাকায় পাঠানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু আসামিরা স্বর্ণাকে ঢাকায় না নিয়ে বাড়ি নিয়ে যান। পরদিন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে ১১ মে স্বর্ণাকে রাজধানীর ন্যাশনাল নিউরো সাইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ মে রাত ২টার দিকে স্বর্ণার মৃত্যু হয়।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, লাশ ঢাকা থেকে এনে এলাকায় দাফন না করে নিহতের বাড়ি থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে উপজেলার ইসলামপুর জামিয়া গাফুরিয়া মাদ্রাসার কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়েটি ব্রেইন স্ট্রোকে মারা গেছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *