মোদির আমন্ত্রণ বাতিলের দাবি হেফাজতের

Slider রাজনীতি

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণ বাতিলের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির ঢাকা মহানগর আমীর জুনায়েদ আল হাবীব এ দাবি জানান। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি সারা দুনিয়াতে মুসলিম বিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত। আমরা দেশের অধিকাংশ মানুষের সেন্টিমেন্টের প্রতি সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণ বাতিলের আহ্বান জানাই।

লিখিত বক্তব্যে জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, মুসলমান হিসেবে ঈমানী দায়িত্ব ও দেশপ্রেমের দায়বোধ থেকেই নরেন্দ্র মোদির আগমণের বিরুদ্ধে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে। হেফাজতের কি ধরনের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে জানতে চাইলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আমরা এখন কোনও কর্মসূচি ঘোষণা করছি না। আপতত এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে আমাদের বক্তব্য দেয়া অব্যাহত থাকবে।

নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণ বাতিলের দাবি সরকারকে সরাসরি জানানো হবে কিনা জানতে চাইলে মামুনুল হক বলেন, আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের কাছে এই দাবি জানিয়েছি। এর বাইরে সরাসরি সরকারের কাছে কোনও দাবি তুলে ধরা হবে না।

মামুনুল হক আরও বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম কোনও উগ্রবাদী সংগঠন নয়, শান্তিপূর্ণ সংগঠন।
নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ জানানোই আমাদের কাজ। এখানে রাজপথে মিছিল অথবা সংঘাতমূলক কোনও কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে না।

মোদির আগমণে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী মহিমান্বিত হবে না বরং কলঙ্কিত হবে বলে দাবি করে মামুনুল হক বলেন, যে কোন উপায়ে নরেন্দ্র মোদির কাছে সংবাদ পৌঁছাবে যে মানুষ তাকে চাচ্ছে না। কাজেই তারও যদি আত্মসম্মানবোধ থেকে থাকে তাহলে তিনিও বাংলাদেশে আসবেন না।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী থাকায় আমরা কোনও কর্মসূচিতে যাচ্ছি না। তবে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো অব্যাহত থাকবে।’

লিখিত বক্তব্যে জুনায়েদ আল হাবীব আরও বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উদযাপনে এমন কাউকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা উচিত হবে না, যাকে এদেশের মানুষ চায় না।

ভারতের আভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং নির্বাচন নিয়ে হেফাজত কথা বলতে ইচ্ছুক নয় বলে উল্লেখ করে জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, তারপরেও অবস্থাদৃষ্টে বলতে হয়, সচেতন পর্যবেক্ষকদের মতে পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে পরিকল্পিত ছক অনুযায়ী সংখ্যালঘু নিপীড়নের নাটক সাজানো হচ্ছে। এর দ্বারা মোদি ও তার সহযোগী উগ্র হিন্দুত্ববাদী কাপালিক গোষ্ঠী একদিকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচনে ফায়দা হাসিল করতে চাইছে। সাম্প্রতি কুরআনের ২৬টি আয়াত বাতিল চেয়ে ভারতের কোর্টে রিট হয়েছে বলে উল্লেখ করে হেফাজতের এই নেতা আরও বলেন, এই রিটের মাধ্যমে গোটা পৃথিবীর মুসলমানদের কলিজায় আঘাত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ১৭ই মার্চ সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনার যাচাই-বাছাই ছাড়াই এক শ্রেণির মিডিয়া তাৎক্ষণিক প্রচার করে ‘হেফাজতে ইসলাম যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঝুমন দাসের ফেসবুকে কটূক্তির প্রতিবাদে এই হামলা হয়েছে। অথচ দুদিনের মাথায় স্পষ্ট হয় এই ঘটনায় আমাদের দূরতম সম্পৃক্ততাও নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *