তীব্র শীতের মধ্যে ২ সন্তানসহ স্ত্রীকে বাসস্ট্যান্ডে রেখে পালালো স্বামী

Slider নারী ও শিশু

নান্দাইল (ময়মনসিংহ): বিয়ের ১০ বছর পর প্রথমবারের মতো শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসস্ট্যান্ডে স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে লাপাত্তা হয়েছেন স্বামী। পরে বারবার ফোন দিলেও তার পক্ষে আর সংসার করা সম্ভব নয় বলে ফোন কেটে দেন। তীব্র শীতের মধ্যে বাসস্ট্যান্ডে বসে আছেন মধ্যবয়সী এক নারী। তার কোলে ছয় মাসের শিশু। পাশেই হাত দিয়ে ধরে রেখেছেন চার বছর বয়সী আরেক সন্তানকে।

এ সময় ওই নারী মোবাইলে কান্না করে কাউকে বলেছেন, ‘আমাকে নিয়ে যান, আপনি কোথায় গেলেন, আমি আপনার কাছে কিছুই চাই না, শুধু সংসার করতে চাই। শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের নান্দাইল উপজেলা সদরের পুরানা বাসস্ট্যান্ডে।

বাসের টিকিট মাস্টার মো: মুন্না মিয়া জানান, খুব ভোরে ওই নারী দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে আসেন। পরে দেখা যায়, ‘ওই নারী মোবাইল ফোনে কার সাথে যেন উচ্চস্বরে কান্না করে তাকে নিয়ে
যাওয়ার জন্য আকুতি জানান। ’

ওই নারী বলেন, তার নাম ঋতু পর্ণা (২২)। তিনি জামালপুর জেলার সদর উপজেলার লাহিড়িকান্দা নামক জায়গার সামছুল হকের মেয়ে। তিনি ঢাকার একটি গার্মেন্টসে কাজ করতেন। সেখানেই পরিচয়ের সূত্র ধরে ১০ বছর আগে বিয়ে হয় মোশারফ হোসেন (৩০) নামে এক ব্যক্তির সাথে। কয়েক বছর ঢাকায় থাকার পর বাবার বাড়িতে চলে আসেন। স্বামী মোশারফও মাঝেমধ্যে আসতেন। তাদের সংসারে নিরব ও রূপা নামে দুটি সন্তান রয়েছে। নিরবের বয়স ছয় বছর এবং রূপার চার মাস। সন্তান জন্ম নেয়ার পর থেকেই ভরণ-পোষণ দিতে অনীহা দেখান স্বামী। একপর্যায়ে শ্বশুরবাড়ি যেতে চাইলে বিভিন্ন টালবাহানায় এড়িয়ে যান।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুই সন্তানের অসুস্থতার কথা বলে টাকা দাবি করলে স্বামী মোশারফ দিতে অস্বীকার করেন। পরে সন্তানসহ নিজে আত্মহত্যার কথা বললে মোশারফ ফোনে বলেন নান্দাইলে আসার জন্য। তার কথামতো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর নান্দাইল সদরে এসে তাকে খোঁজ করে পাওয়া যায়নি। তার সাথে থাকা স্বামীর একটি জন্ম নিবন্ধনের ঠিকানা ধরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের লংগারপার গ্রামে গিয়ে স্বামীর সন্ধান পান।

রাত যাপনের পর তাকে শুক্রবার ভোরে নিয়ে আসে নান্দাইল বাসস্ট্যান্ডে। এরপর আসছি বলে একটি বাসে উঠে চলে যান মোশারফ। বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও স্বামীর খোঁজ পাননি ওই নারী।

ফোনে বারবার চেষ্টা করে একবার সংযোগ পেলে স্বামী জানান, তার পক্ষে সংসার করা সম্ভব নয়। পরে সকাল ১০টার দিকে ওই নারী বাবার বাড়িতে রওনা দেন।

এ বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে আমার কাছে এলে আমি আইনগত
সহায়তা করবো।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *