বাংলাদেশে নারীর বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন শত শত মানুষ। যৌন সহিংসতার সর্বশেষ ঘটনায় ক্ষোভ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভে মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির একটি প্রতিবেদন ‘বাংলাদেশ রকড বাই ফ্রেশ প্রোটেস্টস ওভার সেক্সুয়াল এসল্ট’ (যৌন সহিংসতার প্রতিবাদে কাঁপল বাংলাদেশ) শিরোনামে প্রকাশ করেছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল। তাতে এসব কথা বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, দক্ষিণের জেলা নোয়াখালিতে অনগ্রসর সমাজের একজন নারীর ওপর হামলা করে তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ ও সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার পর ঢাকা ও অন্যান্য স্থানে বিক্ষোভ প্রতিবাদ দেখা দিয়েছে। ওই ভিডিও ক্লিপ প্রত্যাহার করে নেয়ার আগেই ফেসবুকে হাজার হাজারবার তা শেয়ার দেয়া হয়েছে। এতে সারাদেশে অনলাইনে ক্ষোভ জ্বলে উঠেছে। অধিকারকর্মীরা বলছেন, যৌন নির্যাতনের শিকার নারীদের খুব ক্ষুদ্র অংশই বিচার পেয়ে থাকেন।
প্রতিবেশী ভারতে ‘অচ্ছুৎ’ দলিত এক টিনেজারকে উচ্চ বর্গীয় চারজন মিলে গণধর্ষণের প্রতিবাদে ক্ষোভ ঝরছে। এর এক সপ্তাহ পরেই বাংলাদেশে বিক্ষোভ হচ্ছে। বাংলাদেশে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, হতাশাজনক নতুন ভিডিও ফুটেজ মর্মান্তিক সহিংসতা প্রদর্শন করে, যার নিয়মিত শিকারে পরিণত হচ্ছেন বাংলাদেশি নারীরা। অ্যামনেস্টি এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও পক্ষপাতিত্বহীন তদন্ত দাবি করেছে।
এমনকি এই ভিডিও ফুটেজ সবার নজরে আসার আগে, গত সপ্তাহে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের বেশ কিছু সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদেরকে উত্তরে সিলেট জেলায় এক নারীকে গণধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। এ নিয়ে আগে থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল। মঙ্গলবার ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অফিসমুখী পদযাত্রার সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বেশ কিছু মানুষ আহত হয়েছেন। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও কিছু বামপন্থি বিক্ষোভকারী সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। এ ঘটনা বিরল, যেখানে প্রকাশ্যে সরকারের সমালোচনা এক বিরল ব্যাপার। স্থানীয় মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (এএসকে) মতে, এ বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশে প্রায় ১০০০ ধর্ষণ হয়েছে। এর মধ্যে ২০৮টি গণধর্ষণ।