গাজীপুর: জেলায় সরকারী বেসরকারী হাসপাতাল বা অন্যান্য কোন চিকিৎসালয়ে কোর রোগী অবহেলা বা ভুল চিকিৎসায় মারা গেলে দায় কেউ নিতে চায় না। মামলা মোকদ্দমার ঝামেলা ও লাশ কাটাকাটির ভয়ে সহজে কেউ আইনের আশ্রয় নেয় না। ফলে অপরাধ চাপা পড়ে যায়। চাপা অপরাধের স্তুপ ভারী হওয়ায় মূল অপরাধটির পাখা গজিয়েছে আজ ভালো করেই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুর জেলায় প্রায়ই ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। চিকিৎসায় ভুল আবার কখনো অবহেলা। তবে যথাযথ চিকিৎসা সেবা না পেয়ে রোগীর মুত্যৃ হলে সেটাই শব্দ হয়। মারা যাওয়া রোগীর স্বজনেরা হত্যার অভিযোগ তুলেন। কিছুদিন পর মিল মিশ হয়ে যায়। এই ভাবেই রোগী মৃত্যু হচ্ছে আর আপসও হচ্ছে। এতে বাড়ছে প্রয়োজনীয় সেবা না পেয়ে রোগী মৃত্যুর সংখ্যা। আর ভারী হচ্ছে ভুল বা অবহেলায় রোগী মৃত্যুর পাল্লা।
তথ্য বলছে, কোন হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় বা অবেহলায় রোগীর মৃত্যু হলে প্রথমেই একটি চক্র অভিযোগকারীদেরকে নানা ভাবে ভয় ভীতি দেখানো শুরু করেন। তারা বিচারে বিলম্ব দেখিয়ে বলেন, লাশ কাটাকাটি হবে, মামলা মোকদ্দমা হবে, কবে বিচার পাওয়া যাবে ঠিক নেই। আর দায়ীদের শাস্তি দিতে কত বছর লাগবে তাও ঠিক নেই। এই সব করতে অনেক টাকা পয়সা খরচ হবে। এ ছাড়া পুলিশ-সাংবাদিকের ঝামেলা তো থাকছেই। এ সব শুনে অভিযোগকারীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ফলে কোথাও অভিযোগ না করে নীরবে লাশ নিয়ে বাড়ি চলে যায়। পারিবারিকভাবে দাফন করে ফেলে লাশ। আর সারাজীবন এই কান্না হয়ে যায় দুঃখের পুঁজি।
আমাদের প্রচলিত আইনে কোন অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য লাশের কোন নিজম্ব লোক পাওয়া না গেলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করতে পারে। লাশের নিজস্ব লোকজন কোন কারণে মামলা করতে না চাইলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করতে পারে। প্রয়োজনে লাশের দাবীদার পক্ষের মামলা করার রহস্যজনক অনীহা থাকলে পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করতে পারে। আইন আছে, যথাযথ প্রয়োগ নেই। বিচার আছে তবে দীর্ঘ সূত্রিতা থাকায় ন্যায় বিচার অনেক সময় অনিশ্চিত হয়ে যায়। ফলে অবহেলা বা ভুল চিকিৎসায় রোগী মুত্যৃর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।
এ ছাড়া যে চিকিৎসালয়ে অবহেলা বা ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়, সে প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বা নবায়ন করা আছে কি না সেটা দেখার সময়ই হয় না প্রশাসনের। কারণ আবেদন করলেই হাসপাতাল চালানো যায়। লাইসেন্স পেতে যত সময় যায়, অসুবিধা নেই।