নবীগঞ্জে সাংবাদিক আজাদসহ দুজন গ্রেফতার

Slider বাংলার মুখোমুখি

10926442_758083827621016_5932844614902833616_n

পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জেরধরে দৈনিক সমকাল পত্রিকার প্রতিনিধি ও নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি এমএ আহমদ আজাদসহ দু’ জনকে চাদাঁবাজির মামলায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার ভোর রাতে সাংবাদিক আজাদকে তার বাড়ি থেকে এবং অপর ধৃত বজলু মিয়াকে তার বাড়ি পারকুল গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে সিনিয়র সাংবাদিক এমএ আহমদ আজাদকে গ্রেফতারের খবরে সকাল থেকেই সংবাদকর্মীরা থানায় ভিড় করেন। কিন্তু সংবাদ কর্মীরা থানায় পৌছার আগেই তাদেরকে কোর্ট হাজতে প্রেরন করে পুলিশ। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ।

জানাযায়, দীর্ঘদিন ধরে নবীগঞ্জ উপজেলার পারকুল গ্রামের আনকার ও বজলু মিয়ার সাথে একই এলাকার দুলাল মিয়া ও ওয়ার্ড বিএনপি নেতা হেলাল মিয়ার মধ্যে স্থানীয় বিদ্যুত প্লান্টের ঠিকাদারীর ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে দুলাল মিয়া পারকুল গ্রামের আনকার ও তার সহোদর বজলু মিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন হয়রানী মূলক মামলা করে এবং নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। এদিকে হঠাৎ কোন তদন্ত ছাড়াই গভীর রাতে দুলালের ভাতিজা বেলাল মিয়া বাদি হয়ে থানায় সাংবাদিক এমএ আহমদ আজাদসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে চাদা বাজির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে। ভোর রাতে পুলিশ সাংবাদিক আজাদকে তার গ্রামের বাড়ি ছিট ফরিদপুর গ্রাম থেকে এবং অপর আসামী বজলু মিয়াকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে এফআইআর কপি ছাড়াই ধৃতদের কোর্ট হাজতে প্রেরন করে পুলিশ। ঘটনার অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, কথিত মামলার বাদী পারকুল গ্রামের আনছার মিয়ার ছেলে বেলাল মিয়া গত ২০ জানুয়ারী ঘটনার তারিখ দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা চাদাদাবীর অভিযোগ এনে সাংবাদিক আজাদসহ তার প্রতিপক্ষ অপর দু’জনকে আসামী করে গতকাল ২২ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। ওইদিনই সকাল ৭.১০ ঘটিকায় অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করা হয়। গ্রেফতার দেখানো হয়েছে সকাল সাড়ে ৮টায় পারকুল বিদ্যুৎ প্লান্টে। অথচ স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, সাংবাদিক এমএ আহমদ আজাদকে ভোর ৪টার দিকে তার বাড়ি ছিটফরিদপুর গ্রাম থেকে এবং অপর আসামী বজলু মিয়াকে তার বাড়ি পারকুল গ্রাম থেকে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। সকাল ৮টার দিকে তড়িগড়ি করে এফআইআর কপি ছাড়াই চালান পত্র দিয়ে তাদেরকে কোর্ট হাজতে প্রেরন করে পুলিশ। এলাকাবাসী জানান, মামলার বাদী বেলাল মিয়া নিজেকে বিদ্যুৎ প্লান্টের ঠিকাদার দাবী করলেও বাস্তবে তিনি ঠিকাদারী কাজে জড়িত নন। বাদীর চাচা দুলাল মিয়া ও হেলাল মিয়া ঠিকাদারী কাজে সংশ্লিষ্ট রয়েছে। এদিকে সাংবাদিক আজাদকে সাজানো মামলায় গ্রেফতার করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ। তারা জানান এ বিষয়ে পরবর্তী করনীয় নিয়ে শুক্রবার বেলা ২ টায় প্রেসক্লাবের জরুরী বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠক থেকে পরবর্তী কর্মসুচী নির্ধারণ করা হবে।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক আজাদ বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি ইদানিং কয়েকটি সত্য ঘটনার সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশ করতে গিয়ে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে যায়। এতে পুলিশ প্রশাসন আমার উপর ক্ষীপ্ত হয়ে উঠে। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবারের দৈনিক খোয়াই পত্রিকায় আমার নিজ নামে নবীগঞ্জে গাড়ি ভাংচুর ও নাশকতার মামলায় জেলে থাকা দু’ ব্যক্তি আসামী শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এতে আমার উপর পুলিশ আরো ক্ষুদ্ধ হয়ে ষড়যন্ত্র মুলক ভাবে এ সব কারনেই দুলালের ভাতিজাকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে সাজানো এই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাংবাদিক আজাদ বলেন, আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে জামিনে এসে বিষয়টি নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করে ন্যায় বিচার চাইব। অপর আসামী আনকার মিয়া বলেন, দুলাল মিয়া আমার ব্যবসায়ীক পাটনার ছিল। তার কথায় জামায়াত শিবিরের মিটিংয়ে না যাওয়ায় বিরোধ দেখা দেয়। তার কাছে আমার প্রায় ৫ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। ওই টাকা খোজঁতে গিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। টাকা খোজঁতে গেলে তার সাথে প্রশাসনের বড় বড় কর্তাদের সম্পর্ক রয়েছে, বেশী মাথলে শিক্ষা দিবে বলিয়া হুমকীও দেয়। তাদের ভয়ে আমার পরিবার বাড়িঘর ছাড়া। আমাদেরকে সে একাধিক মিথ্যা মামলায় ফাসিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *