গাজীপুর: আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান শাহেদ ও এমডি মাসুদ চৌধুরীর নিকট গাজীপুর থেকে কত রোগী গেলো আর কতগুলো করোনা রিপোর্ট গাজীপুরে আসল, তার তদন্ত চায় সাধারণ মানুষ। রিজেন্ট হাসপাতালের এমডির বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায় হওয়ায় মানুষের মনে সন্দেহ জাগতেই পারে যে, গাজীপুর থেকে রিজেন্টে যাওয়া রোগী ও করোনা রিপোর্টের সংখ্যা কত। তদন্ত করে এই সংখ্যা ও করোনা সনদ বের করার দাবী চারিদিকে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুর জেলায় প্রায় অর্ধসহস্র বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে রয়েছে। এই সব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মধ্যে কতগুলোর কাগজপত্র আপডেট তা স্পষ্টভাবে এখনো জানা যায়নি। শুধু বলা হচ্ছে, আপডেটের কাজ চলছে। তবে আপডেট করা সঠিক কাগজপত্র থাকা বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিক ডায়গনষ্টিক সেন্টার ও ডেন্টাল ক্লিনিকের সংখ্যা এক ডিজিট ক্রস করাও কষ্টকর হতে পারে। স্বাস্থ্যসেবা খাতে এই অনিয়ম আজ কালের নয়। চলছে দীর্ঘ সময় ধরে। এই অনিয়মটা চলছেও একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। গুরুত্বপূর্ন বিভিন্ন পেশার লোকজন নিয়ে গড়া ওই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করছে গাজীপুর জেলার বেসরকারী স্বাস্থ্যখাত। এই সিন্ডিকেটের সদস্যের সংখ্যা ডজন খানেক হতে পারে।
একটি গোপন সূত্র জানায়, গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাপসাতাল থেকে অনেক রোগী রিজেন্টে গিয়েছে। হাসপাতালের সামনে থাকা এ্যাম্বুলেন্স গুলো সব সময় অতিআগ্রহী থাকত রোগী নিয়ে রিজেন্টে যেতে। এই আগ্রহের কারণ হিসেবে জানা গেলো, রিজেন্টে করোনা বা যে কোন রোগী নিয়ে গেলে এ্যাম্বুলেন্সেকে রিজেন্ট কর্তৃপক্ষ ১৫ হাজার টাকা দিত। গাজীপুর টু উত্তরা ভাড়া ১৫ হাজার। এই লোভে পড়ে গাজীপুর সদর, কাপাসিয়া, শ্রীপুর, কালিগঞ্জ, টঙ্গী, কালিয়াকৈর, কোনাবাড়ি, কাশিমপুর সহ বিভিন্ন হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স চালকেরা সব সময় রিজেন্ট হাপসাতালে রোগী নিয়ে যেতো। কোন রোগী ঢাকার অন্য হাসপাতালে যেতে থাকলে রাস্তায় অসুস্থ্যবোধ করলে রিজেন্টে ঢুকিয়ে দেয়া হত এ্যাম্বুলেন্স। তাই গরীব চালকেরা বেশী ভাড়া পেতে রোগী নিয়ে উত্তরার রিজেন্ট হাপসাতালে যেতে আগ্রহী থাকত সব সময়।
গাজীপুর জেলার সাধারণ মানুষের দাবী, গাজীপুর জেলায় শাহেদ-মাসুদদের ঘনিষ্ট সহযোগী চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনা উচিত। একই সঙ্গে রিজেন্ট সহ ভুয়া করোনা রিপোর্ট দেয়া হাসপাতালগুলো থেকে গাজীপুরে কতগুলো রিপোর্ট এসেছে, তা চিহিৃত করে আবার পরীক্ষার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা দরকার। তা না হলে সন্দেহ থেকেই যাবে মানুষের মধ্যে।
প্রসঙ্গত: ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তর সন্দেহজনক করোনা রিপোর্টের রোগীদের পুনরায় নমুনা দিয়ে পরীক্ষা করতে চাইলে পরীক্ষা করার আহবানও জানিয়েছে। এতে কতটুকু সাড়া পড়েছে তা দৃশ্যমান নয়।