মধুপুরে ছাঁদবাগান সাথে নাইট কুইন ফুলের সৌরভে ফুলপ্রেমীরা মুগ্ধ!

Slider লাইফস্টাইল


সাইফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ নাইট কুইন বা রাতের রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম পেনিওসিরাস গ্রেজ্জি। বিরল প্রজাতির ক্যাকটাস জাতীয় এই ফুলটির বৈশিষ্ট্য অন্যান্য ফুলের তুলনায় একটু আলাদা। এটি বছরে মাত্র একদিন এবং মধ্যরাতে পূর্ণ বিকশিত হয়। আর শেষ রাতেই জীবনাবসান ঘটে। পাথরকুচির মতো পাতা থেকেই এই ফুলগাছের জন্ম হয়। আবার পাতা থেকেই প্রস্ফুটিত হয় ফুলের গুটি। ১৫ দিন পর গুটি থেকে কলি হয়। যে রাতে ফুলটি ফুটবে, সেদিন বিকেল থেকেই কলি অদ্ভুত অপরূপ সুন্দরভাবে সাজে। এরপর ধীরে ধীরে অন্ধকার যখন চারিদিকে ঘিরে ধরে, ঠিক তখন নিজের সৌন্দর্যে স্বমহিমায় প্রস্ফুটিত হয় ফুলটি। আর এর সুবাসে তীব্রতা না থাকলেও অদ্ভুত মিষ্টি মাদকতা আছে, যা পুষ্পপ্রেমীদের সবসময়ই মুগ্ধ করে কাছে টানে।

ফুল পবিত্রতা ও ভালোবাসার প্রতীক হলেও মানুষভেদে ফুলের পছন্দে তারতম্য দেখা যায়। হয়তো কারও কাছে পছন্দের ফুল গোলাপ, হয়তো বা কারও কদম। কারও বা পছন্দ বিদেশি কোনো ফুল। তবে ‘নাইট কুইন বা রাতের রাণী’ নামের ফুলটির রূপ আর বৈশিষ্ট্যের কারণে নজর কাড়ে সবারই।

টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর পৌর শহরের বাসিন্দা ও ফুলপ্রেমী মানিক বসুর বাড়িতে ফুটেছে দুর্লভ এই নাইট কুইন ফুল। দীর্ঘদিন অপেক্ষা করার পর বছরে মাত্র একবার ফোটা ফুলটি রাতের আঁধারে নিজের সৌন্দর্য মেলে ধরে আর সকাল হওয়ার আগেই ফের ঝরে পড়ে। পুষ্পপ্রেমীদেরকে এই ফুলের জন্য টানা এক বছর অপেক্ষা করতে হয়। দেশে দুর্লভ প্রজাতির ফুল হিসেবেই গণ্য করা হয় নাইট কুইনকে।

মানিক বসু ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা গাবতলী ডিগ্রী (অনার্স) কলেজের হিসাব বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত। তিনি ফুলকে ভালবেসে তার বাসায় ছাদে ও জানালায় টবে করেছেন ফুল বাগান। এতে ৫ রকমের গোলাপ ফুল রয়েছে। লাল,খয়েরি,সাদা,কমলা,হলুদ রঙের গোলাপ। এছাড়াও এর সাথে হাসনাহেনা, গন্ধরাজ, চামেলি, কামিনী, কমলা, আম, পেয়ারা, পুদিনাপাতা, লেবু, টগর, এলোমুন্ডা, আ্যালোভেরা, ডালিম প্রভৃতির সমারোহে প্রকৃতিপ্রেমী ও পুষ্পপ্রেমীরা মুগ্ধ। এতে অন্যান্য ফুলের গাছ লাগানোর পাশাপাশি নাইট কুইন ফুলগাছও লাগিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর অপেক্ষার পর একদিন রাতে বাসার ছাদে দুর্লভ এই নাইট কুইন ফুল ফুটেছে।

মানিক বসু জানিয়েছেন, “মোট ৩০টি নাইট কুইন লাগিয়েছিলাম। তার মধ্যে ৬ থেকে ১০ টি গাছে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নাইট কুইন ফুটেছে। আর বাকিগুলোতে কলি এসেছে। নাইট কুইনের সুগন্ধে চারপাশ নান্দনিক পরিবেশ তৈরি হয়। অনেকে দেখতে এসে মুগ্ধ হয়েছেন। ২১ শে ফ্রেব্রুয়ারী সহ বিভিন্ন দিবসে অনেকে ছাঁদবাগান হতে ফুল সংগ্রহ করে সানন্দে। আর এতে প্রতিবেশীরা এক নজর দেখার জন্য বাসায় ভিড় জমাচ্ছেন।”

ফুল দেখতে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘নাইট কুইন আগে কখনো দেখেনি। মানিক বসু স্যারের বাসায় এই প্রথম দেখলাম। ফুল ফুটতে দেখে আমরা অবাক হয়েছি। এতে নাইট কুইন চারা আমাদের বাসা-বাড়িতে লাগানোর আগ্রহ বাড়ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *