করোনাকালে সেবাদানকারী সরকারী চাকরিজীবীর মৃত্যু হলে পাবেন সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা

Slider অর্থ ও বাণিজ্য জাতীয় সারাদেশ


ঢাকা: করোনা রোগীদের সেবাদানকারী কোনো সরকারের চাকরিজীবী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা পাবেন। একইভাবে সেবাদান অবস্থায় করোনা পজিটিভ হলে তিনি পাবেন সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা। গতকাল বিকালে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এই পরিপত্রটি চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর বলে বিবেচিত হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা রোগীদের সেবাদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের বীমাসহ প্রণোদনা দেয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানে সরাসরি কমর্রত ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ এ সংক্রান্ত সরকার ঘোষিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রে অন্যান্য কর্মচারী দায়িত্ব পালনকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে সরকার ক্ষতিপূরণ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

এক্ষেত্রে ১-৯ গ্রেডের কেউ করোনা রোগে আক্রান্ত হলে বা করোনা পজিটিভ হলে তিনি পাবেন ১০ লাখ টাকা। আর মারা গেলে পাবেন ৫০ লাখ টাকা। একইভাবে ১০-১৪ গ্রেডের চাকরিজীবিরা করোনায় আক্রান্ত হলে পাবেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা। মারা গেলে পাবেন সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। আর ১৫-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীরা করোনায় আক্রান্ত হলে পাবেন ৫ লাখ টাকা এবং মৃত্যুবরণ করলে দেয়া হবে ২৫ লাখ টাকা।

প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, ওই ক্ষতিপূরণের আওতায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানে সরাসরি কর্মরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থসেবা কর্মী, ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে লকডাউন ও সরকার ঘোষিত নির্দেশনা বাস্তায়নে নিয়োজিত মাঠ প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই সুবিধা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির জন্য কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে বলে পরিপত্রে বলা হয়েছে। এই পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে করোনাভাইরাস পজিটিভের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীসহ মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনাভাইরাস পজিটিভের প্রমাণক/মেডিকেল রিপোর্টসহ নিজ নিজ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে একটি নির্দিষ্ট ফরমে ক্ষতিপূরণের দাবিনামা পেশ করতে হবে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণের ক্ষেত্রে অন্য একটি নির্দিষ্ট ফরমে মৃত্যুবরণকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্ত্রী/স্বামী/সন্তান এবং অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে বাবা/মা ক্ষতিপূরণের দাবি সংবলিত আবেদন নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করবেন।

এরপর আবেদন নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ এই ফরমগুলো যাচাই-বাছাইপূর্বক সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের মাধ্যমে অর্থ বিভাগে প্রস্তাব প্রেরণ করতে হবে।
শুধুমাত্র প্রজাতন্ত্রের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী উপরোক্ত কাজে নিয়োজিত রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য হবে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী ক্ষতিপূরণের টাকা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোভিড-১৯ সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় ক্ষতিপূরণ-বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে নির্বাহ করা হবে। আর এই ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রচলিত কর্মকালীন মৃত্যুবরণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আর্থিক সহায়তার অতিরিক্ত হিসাবে বিবেচিত হবে এবং পরিপত্রটি চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে বাস্তবায়ন হবে পরিপত্রে জানানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *