স্টাফ রিপোর্টার | বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ১১০১জন চিকিৎসক। বাংলাদেশ মেডিকেল এসোশিয়েশন (বিএমএ)’র সাবেক কার্যকরী সদস্য ডা. এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে চিকিৎসকরা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বেশ কিছু দিন ধরে দেশের রাজনৈতিক সহিংসতার ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। হত্যা, গুম, নির্যাতন, মানবাধিকার লঙ্ঘন বেড়েই চলছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার নেই বললেই চলে। সন্ত্রাস, দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, ব্যাংক লুট আজ নৃত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। ৫ই জানুয়ারির ভোটার বিহীন তথাকথিত নির্বাচন দেশকে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, দেশের সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন উৎকণ্ঠা, চরম অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহিনীতায় দিনাতিপাত করছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ৫ই জানুয়ারী গণতন্ত্র হত্যা দিবস ঘোষণা করে ঢাকায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়া। কিন্তু সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করে সরকার তা বানচাল করার জন্য ঢাকামুখী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। সারাদেশে চালানো হয় গণগ্রেপ্তার, হাজার হাজার নেতা-কর্মীর নামে দায়ের করা হয় মামলা। সরকারের নির্দেশে বালু, পাথরের ১৩টি ট্রাক, এপিসি, জলকামান, টিয়ারগ্যাস, গুলিসহ শতশত পুলিশ-র্যাব দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় খালেদা জিয়াকে। একটি আবদ্ধ জায়গায় মৃত্যুর ঝুকিপূর্ণ পেপার ¯েপ্র ব্যবহার করা হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রেসক্লাব থেকে, শমসের মবিন চৌধুরীকে বাড়ি থেকে, হাবিবুর রহমান হাবিবকে টকশো অনুষ্ঠানের পর চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিউদ্দিন আহমেদের গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার পর আরেকজন উপদেষ্টা রিয়াজ রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে এবং তাঁর গাড়ীসহ জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া দেশজুরে যে সহিংসতা, অংগ্নিসংযোগ, গাড়ী ভাংচুর, মানুষ পুড়িয়ে মারায় সাধারণ জনগণ আজ খুবই উদ্বিগ্ন ও উৎকন্ঠার মধ্যে আছে। চিকিৎসকরা বলেন, আমরা চাই অনতিবিলম্বে দেশে শান্তি ফিরে আসুক। দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দল আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এর আশু সমাধান করুক। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী জনগণের ভোটের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক। আইনের শাসন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, জানমালের নিরাপত্তা আবার ফিরে আসুক। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন- প্রফেসর ডা. এমএ মাজেদ, প্রফেসর ডা. আবদুল বায়েস ভূইয়া, প্রফেসর ডা. এম মবিন খান, প্রফেসর ডা. খাদিজা বেগম, প্রফেসর ডা. আব্দুল মান্নান মিয়া, প্রফেসর ডা. সায়েবা আক্তার, প্রফেসর ডা. একেএম আজিজুল হক, প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, প্রফেসর ডা. মতিউর রহমান মোল্লা, প্রফেসর ডা. মিজানুর রহমান, প্রফেসর ডা. রফিকুল কবির লাবু, প্রফেসর ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, প্রফেসর ডা. একেএম ফজলুল হক, প্রফেসর ডা. এসএ খান সহ ১১০১ জন চিকিৎসক স্বাক্ষর করেন।
এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত