হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাটঃ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে প্রানঘাতী নভেল করোনা ভাইরাস। ব্যাপকভাবে বিস্তার ঘটছে বাংলাদেশেও। এ নিয়ে আতঙ্কও কম নয় লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলাতেও। করোনা মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও রয়েছে বেশ তৎপর। দিনে রাতে টইল অব্যাহত রেখেছেন যাতে অপ্রয়োজনে কেউই বাড়ির বাইরে বের না হয়। বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিকসহ বিভিন্ন মহল ও ব্যাক্তি উদ্যোগে কর্মহীন ও অসচ্ছল পরিবারে খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে চলছে সচেতনতা কার্যক্রম। কিন্তু অধিকাংশ সাধারণ মানুষের মাঝে নেই তেমন সচেতনতা।
নিম্ন আয়ের মানুষের দাবি কাজ না করলে পেটে ভাত যাবে না। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে থাকতে হবে তাদের। তাই বাধ্য হয়েই কাজের সন্ধানে বের হতে হয় রাস্তায়। কিন্তু আয় খুব কম হওয়ায় অতিকষ্টে জীবন যাপন করছেন এসব নিম্ন আয়ের মানুষ।উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে অনেকেই জানিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারিভাবে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ হলেও তা অপ্রতুল। কেউ এক-দুই বেলার খাবার সামগ্রী দিলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এক-দুই দিনের খাবার পেলেও বাকী দিনগুলোয় তো খেতে হবে। এমন চিন্তায় করোনাকেও ভয় না করে সংসার বাঁচাতে বেরিয়ে পড়েন অনেকে ।
অপরদিকে গ্রামগুলোর হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে মানুষের ভীড়। কিছু কিছু চায়ের দোকান বাইরে ঝাপ বন্ধ দেখালেও পেছনের দরজা, বা সামন্য পরিমাণ খুলে দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ব্যবসা। এতে করে করোনার ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এছাড়াও বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে উপজেলার ভোটমারী রেল বাজার,তুষভান্ডার বাজারের অলি গলি,কাকিনা হাট,চাঁপারহাট, চর রুদ্রেশ্বর, আমিনগঞ্জ, শুকানদিঘী বাজারে। এখনও অধিকাংশ মানুষই যেনো অসেচতন করোনার ব্যাপারে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন আসলেই তৎক্ষনাৎ বাজার ফাঁকা হয়ে যায় বলেও জানান স্থানীয়রা।
তবে কেউ যাতে অনাহারে না থাকে সে কারণে ১০ টাকা দরে ওএমএস এর চাল বিতরণ শুরু করেছেন সরকার এই চাল বিতরণ শুরু হলে সেখানেও সামাজিক দূরত্ব মানতে দেখা যায়নি। চাউল কিনতে অনেকটা গা ঘেঁষেই লাইনে দাাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। একইভাবে চাল বিক্রি করতে দেখা গেছে অধিকাংশ জায়গাতেই।
অপরদিকে গ্রামগুলোতে ঢাকা ফেরৎ ব্যাক্তিদের চলাফেরাও চোখে পড়েছে বিভিন্ন এলাকায়। বিশিষ্টজনদের অভিমত, করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে সবাইকে কষ্ট করে হলেও সচেতন থাকতে হবে। কেউ যাতে বাইরে বের না হয় সেটা প্রশাসন নয় নিজেকেই চিন্তা করা জরুরি। তবেই নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে বাঁচনো সম্ভব হবে। সম্ভব হবে এই যুদ্ধে জয়লাভ করার।
এদিকে সোমবার থেকে সব জায়গাতে বিশেষ নজরদারি এবং টইল জোরদার করতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। পুলিশি পাহাড়া দেখা গেছে তুষভান্ডার এবং চাঁপারহাট সহ কয়েকটা মোড়ে। তাই অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিন লালমনিরহাট-বুড়িমারী সড়কে তুলনামূলক যান চলাচল কম করতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আরজু মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান,সেনা বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের পাশা পাশি কালীগঞ্জ থানার পক্ষ থেকে হাট-বাজারসহ সব এলাকায় কঠোর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। কেউ অপ্রয়োজনে রাস্তাঘাটে বের হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লেখকঃ হাসানুজ্জামান হাসান,সংবাদকর্মী-,গ্রাম বাংলা নিউজ ২৪ ডটকম।