বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যুর পর মিরপুরের একটি ভবন ‘লকডাউন’

Slider জাতীয় ঢাকা


ঢাকার মিরপুরের উত্তর টোলারবাগ এলাকার একটি ভবন ‘লকডাউন’ করা হয়েছে। মিরপুর-১ নম্বরের ১৯/সি ২/১ নয়তলা ওই ভবনের সকল বাসিন্দা এখন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। ভবনের একটি ফ্ল্যাটের এক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করার পর আইইডিসিআরের নির্দেশনায় ওই ভবন লকডাউন করা হয়েছে। ওই ভবনের ৩০টি পরিবারের সদস্যরা এখন বাইরে বের হতে পারছেন না। তবে জরুরি প্রয়োজনে পরিবারের একজন লোক বাইরে যেতে পারবেন। বাইরে থেকে ওই ভবনে কেউ প্রবেশ করতে পারছেন না। পাশাপাশি ভবনটির আশেপাশে মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। সূত্র জানায়, উত্তর টোলারবাগের ওই ভবনে করোনা ভাইরাস পজিটিভ একজন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সতর্কতার অংশ হিসেবে ওই আক্রান্ত রোগীর স্বজনদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা বলা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, নয়তলা ওই ভবনের সপ্তম তলার একটি ফ্ল্যাটে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কলেজের একজন শিক্ষক পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। কিছুদিন আগে তার জামাতা বিদেশ থেকে এসেছেন। তারই সংস্পর্শে তিনি করোনা আক্রান্ত হন। গতকাল ভোরে তিনি মারা যাওয়ার পর পুলিশ ওই পরিবারকে কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা বলেন। কিন্তু আতঙ্কের কারণে আশেপাশের সবকটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে অবস্থান করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বয়স্ক ওই ব্যক্তি অসুস্থতাবোধ করায় মঙ্গলবার কল্যাণপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানকার চিকিৎসকরা তার হৃদযন্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোনো সমস্যা খোঁজে পাননি। এমনকি তার শারীরিক কোনো উন্নতি হয়নি। পরে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মিরপুরের একটি হাসপাতালে পাঠান। শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা থাকায় একজন বক্ষব্যাধির চিকিৎসক তার চিকিৎসা করেন। চিকিৎসা করতে গিয়ে তিনি আন্দাজ করেন লোকটি করোনা আক্রান্ত। পরে এই হাসপাতালের পক্ষ থেকে আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করে নমুনা সংগ্রহের কথা জানানো হয়। বিদেশ ফেরত না হওয়াতে এবং বিদেশ ফেরত কারও সংস্পর্শে যাননি এমন তথ্য পেয়ে আইইডিসিআর করোনা পরীক্ষা করবে না বলে জানায়। এমনকি তাদের কিটের স্বল্পতা আছে বলে জানানো হয়। পরে অবশ্য বিশেষ তদবিরে ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখা যায় তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। পরে ওই হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি মারা যান। এরপর থেকে হাসপাতালের আইসিইউটি লকডাউন করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া আইসিইউ চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। যদিও হাসপাতালের একটি মোবাইল নম্বরে গতকাল যোগাযোগ করা হলে অপর প্রান্ত থেকে একজন নারী স্টাফ জানান, আইসিইউ লকডাউন করা হয়নি। জীবাণু দূর করতে ধোঁয়ামোছার কাজ চলছে। পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মোশতাক আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, উত্তর টোলারবাগ এলাকার একটি ভবনকে ৭৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার পর আমরা তার পরিবারের সদস্যদের কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছি। এছাড়া ভবনের অন্যানা বাসিন্দারাও নিজেদের সতর্কতার অংশ হিসেবে কোয়ারেন্টিনে আছেন। আমরা ভবনটিকে নজরদারিতে রেখেছি। ভবনটির আশেপাশে মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিবারের কেউ বিদেশ থেকে ফিরেছেন কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোন তথ্য তারা নিশ্চিত হতে পারেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *