দুনিয়াজুড়ে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক। দেশে দেশে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এরই মধ্যে শতাধিক দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন লাখেরও উপরে মানুষ। বাংলাদেশেও তিন জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জনসমাগম এড়াতে প্যারেড গ্রাউন্ডে মুজিববর্ষের মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। কর্মসূচিতে বেশ কাটছাটও করা হয়েছে।
এই যখন অবস্থা তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই দাবি তুলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করার জন্য।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনেকটা জরুরি অবস্থার আদলে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও জরুরি অবস্থা ঘোষণাও করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বেশিরভাগ করোনা আক্রান্ত এলাকায়। সর্বশেষ সৌদি আরবেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর-এর পক্ষ থেকে গতকাল অবশ্য বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে দেয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করার কথা বলেছে। তবুও উদ্বেগাকূল এই পরিস্থিতিতে অনেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পরামর্শ দিচ্ছেন।
বিমানবন্দরসহ দেশে প্রবেশপথ গুলোতে স্ক্যানিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করার দাবি উঠেছে। এই ব্যবস্থায় অনেক ত্রুটি এরই মধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। এইসব দূর করে করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে আসাদের সর্বোচ্চ স্ক্যানিংয়ের আওতায় আনার কথা বলছেন অনেকেই। করোনা মোকাবেলায় কিছু প্রস্তুতি নেয়া হলেও এখনও আরো বহু কিছু করার বাকি রয়েছে। বিশেষ করে হাসপাতালগুলোকে সেভাবে প্রস্তুত করা হয়নি এখনও। করোনায় চিকিৎসকরাও সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন। তাদেরও সে ব্যাপারে প্রস্তুতি প্রয়োজন। জনসমাগম এড়িয়ে চলতে বলা হলেও ঢাকার মতো শহরের বেলায় বাস্তবিক অর্থে বেশিরভাগ মানুষের জন্য তা প্রায় অসম্ভব। তারপরও বিশেষ কিছু উদ্যোগ নেয়া যায়। বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া সভা-সমাবেশের মতো কর্মসূচি পরিহারের পরামর্শ দেয়া যেতে পারে। বিদেশ ফেরতরা যেন অন্তত ১৪ দিন ঘরে থাকেন তা নিশ্চিত করতে হবে। মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা যেন করোনাকে কেন্দ্র করে আখের গোছাতে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখা প্রয়োজন। সর্বোপরি আতঙ্ক নয়, আসুন সতর্ক হই। অন্যকে সতর্ক করি।