জিয়ার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত

Slider জাতীয় বাধ ভাঙ্গা মত

একটি হত্যা অনেকগুলো হত্যাকাণ্ডের জন্ম দেয়। নিরাপদ মনে করে নওয়াজেশের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন খালেদ-হুদা-হায়দার। তাদের যখন হত্যা করা হয় তখন তারা নাশতা খাচ্ছিলেন। নিয়তির কী নির্মম পরিহাস। ৭ নভেম্বর সকালে ক্ষমতার লড়াইয়ে তাহের ছিটকে পড়েন। তাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়েছিল। জিয়া একটা ব্যর্থ অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছিলেন। জিয়া হত্যার অভিযোগে নওয়াজেশকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল।

লেখক, গবেষক, মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমদ তার সদ্য প্রকাশিত ‘বেলা-অবেলা: বাংলাদেশ ১৯৭২-১৯৭৫’ শীর্ষক বইতে এসব কথা লিখেছেন।
এই বইয়ে তথ্য হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তির সাক্ষাতকার ও বইয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মহিউদ্দিন আহমদ আরো লিখেছেন, জিয়া ও তাহেরের মধ্যকার সম্পর্কের অনেকটাই অজানা। মার্কিন অধ্যাপক গবেষক মার্কাস ফ্রান্ডা ১৯৮০ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে জিয়ার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। তাহের সম্পর্কে জিয়ার ইতিবাচক মূল্যায়ন ছিল।

জিয়ার ঘনিষ্ঠজনদের মতে, তাহেরকে ফাঁসি দেয়া ছিল তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত। জিয়া তাহেরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সেনাবাহিনীর ৪৭ জন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে ডেকে তাদের মতামত চেয়েছিলেন। সবাই বলেছিলেন, তাহের বেঁচে থাকলে সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলা বলে কিছু থাকবে না। জিয়া তখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ২১ জুলাই ১৯৭৬ তাহেরকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি দেয়া হয়।

৭ নভেম্বরের ঘটনাটি ছিল অনন্য। এমন একটি ঘটনা এ অঞ্চলে এর আগে ঘটেনি। এই ঘটনায় সামরিক অভ্যুত্থান ও গণঅভ্যুত্থান, দুটোরই উপাদান ছিল যা ঘটনাটিকে বিশিষ্টতা দিয়েছিল। অনেকগুলো পক্ষ এর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিল এবং ঘণ্টায় ঘণ্টায় ক্ষমতার ভারসাম্য এবং সমীকরণ বদলে যাচ্ছিল। কেবল একটি শব্দে বা বাক্যে এটাকে সংজ্ঞায়িত করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *