ঢাকায় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী স্থগিত করোনা: নজরদারিতে পাঁচ বাংলাদেশি

Slider জাতীয় বাংলার মুখোমুখি


একজন চীনা নাগরিকের সঙ্গে ভ্রমণ করায় ৫ বাংলাদেশি নাগরিককে নজরদারিতে রেখেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বাংলাদেশ থেকে ফেরা ও চীনা নাগরিকের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে সম্প্রতি। চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাতক্ষীরা জেলার এসব বাসিন্দা সমপ্রতি থাই লায়ন নামক একটি ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন। একই ফ্লাইটে তাদের সঙ্গে কাছাকাছি সিটে একজন চীনা নাগরিক ভ্রমণ করেছিলেন। দেশে ফেরার পর ওই চীনা নাগরিকের করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িযে পড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধীনে ইন্টারন্যাশনাল হেলথ রেগুলেশনসের (আইএইচআর) আওতায় ১৫৫টি দেশ সমন্বিতভাবে কাজ করছে। সদস্যভুক্ত কোনো দেশে কারও করোনা ভাইরাস ধরা পড়লে সেই ব্যক্তির কোনো ভ্রমণ ইতিহাস আছে কি না, কোথাও ফ্লাইটে ভ্রমণ করে থাকলে তার সামনে ও পেছনের দুই সারিতে অন্য আরও কে কে ভ্রমণ করেছেন, এসব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তা বিভিন্ন দেশের ফোকাল পয়েন্টের কাছে পাঠানো হয়। এই প্রক্রিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, গত ২৯শে জানুয়ারি চীনা নাগরিকের সঙ্গে একই ফ্লাইটে ৫ বাংলাদেশি ভ্রহণ করেছিলেন।

চীনের নাগরিকের করোনা ভাইরাস ধরা পড়লে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের তা জানানো হয়। তবে ওই চীনা নাগরিক থাই লায়ন ফ্লাইটে কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছিলেন কিংবা তার সহযাত্রীরা কোথায় থেকে ফিরেছেন সে সম্পর্কিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি ওই কর্মকর্তা। তিনি জানান, ফ্লাইটে ভ্রমণকারী ৫ বাংলাদেশির নাম-ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্য থাকায় ইতিমধ্যেই রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইসস্টিটিউট (আইইডিসিআর) কর্মকর্তারা ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেছেন। তাদের কিছু পরামর্শ দিয়েছেন এবং আইইডিসিআর কর্মকর্তারা ওই পাঁচজনের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পাঠাতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় কর্মকর্তা পাঠিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ওই পাঁচ ব্যক্তি এখন পর্যন্ত বাড়িতে ভালো আছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।

ঢাকায় আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক প্রদর্শনী স্থগিত
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক প্রদর্শনী ২০২০ স্থগিত করেছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক এসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ)। বিপিজিএমইএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে বাংলাদেশে আসার জন্য চীনা নাগরিকদের অন অ্যারাইভাল ভিসা সাময়িক স্থগিত করে সরকার। এর পর সোমবার বিপিজিএমইএ এই সিদ্ধান্ত নেয়। বিপিজিএমইএ সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, চীন ও তাইওয়ানের একটি প্রতিনিধি দল মেলায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা জানিয়েছে যে, তারা আসতে পারবে না। করোনা ভাইরাসের কারণে তারা আসতে পারছে না বলে জানান তিনি। বিপিজিএমইএ মহাসচিব নারায়ন চন্দ্র দে জানান, প্রতিবারের ন্যায় এবারও আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আগামী ১২ই থেকে ১৫ই ফেব্রুয়য়ারি ১৫তম আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ফেয়ার ২০২০ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হয়েছে। তৈরি প্লাস্টিক পণ্য কাঁচামাল, মেশিনারিজ ও প্রদর্শনের লক্ষ্যে মূলত এই মেলা প্রতিবার অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, বিপিজিএমইএ এবং ইওরকার ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেড, তাইওয়ান-এর যৌথ উদ্যোগে এই প্লাস্টিক ফেয়ার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিশেষ কারণে ওই তারিখের পরিবর্তে আগামী ৪ঠা থেকে ৭ই জুন চার দিনব্যাপী আইসিসিবিতে এই ফেয়ার যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে গত ২রা ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে চীনের নাগরিকদের জন্য অন অ্যারাইভাল (আগমনী ভিসা) আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রদূতকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে মাসখানেকের জন্য বাংলাদেশে থাকা চীনা নাগরিকেরা যেন দেশে যাওয়া এড়িয়ে চলেন। এ ছাড়া চীনের নাগরিকদের জন্য আপাতত অন-অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ থাকবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যদি বাংলাদেশে আসার প্রয়োজন হয়ে পড়ে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে ভিসার আবেদন জানানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *