সে কালো অধ্যায় যেন আর কোনোদিন ফিরে না আসে—প্রধানমন্ত্রী

Slider জাতীয় সারাদেশ

শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমানবন্দরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের অত্যন্ত দুর্ভাগ্য যে, পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারেনি। তাকে জীবন দিতে হয়েছিল বাংলার মাটিতে। বাংলাদেশে মাঝখানে যে কালো অধ্যায় গেছে। সে কালো অধ্যায় যেন আর কোনোদিন ফিরে না আসে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদের একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ দিয়ে গেছেন। তার জীবনের ২৪ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি জাতিকে মুক্ত করেছিলেন। পাকিস্তানের শাসক কোনোদিনও চাইনি বাঙালি রাষ্ট্রক্ষমতায় যাক।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর পাকিস্তানের শাসন মূলত অচল হয়ে পড়েছিল এ দেশে। তাদের কোনো নির্দেশনা কেউ মানতো না। তাদের নির্দেশ অনুযায়ী কোনো কাজ হতো না। বাঙালি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশ। একপর্যায়ে মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানিরা। আন্তর্জাতিক চাপের কারণেই পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল।

এদিকে দেশজুড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জাঁকালো অনুষ্ঠানে ক্ষণগণনা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে মুজিববর্ষের লোগো উন্মোচন করেন তিনি।

জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও সদস্য সচিব কামাল নাসের প্রধানমন্ত্রীর হাতে মুজিববর্ষের লোগো তুলে দেন। এসময় মঞ্চে তার পাশে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং বোন শেখ রেহানা।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মুহূর্তটিকে প্রতীকীভাবে ফুটিয়ে তোলার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে ক্ষণগণনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।

এই আয়োজনে প্রতীকী বিমান অবতরণ ছাড়াও রয়েছে আলোক প্রক্ষেপণে বঙ্গবন্ধুর অবয়ব তুলে ধরা, ২১বার তোপধ্বনি ও গার্ড অব অনার। ১৯৭২ সালে যেভাবে এদেশের সংগ্রামী জনতা বঙ্গবন্ধুকে বরণ করে নিয়েছিল, প্রতীকীভাবে সেই ক্ষণটিও ফুটিয়ে তোলা হয়, ওড়ানো হয় এক হাজার লাল-সবুজ বেলুন এবং অবমুক্ত করা হয় একশ’টি সাদা পায়রা।

অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা ১০ হাজার দর্শক এবং আমন্ত্রিত দুই হাজার দেশি-বিদেশি অতিথি বর্ণাঢ্য এ অনুষ্ঠান উপভোগ করছেন। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরাও এতে উপস্থিত রয়েছেন।

অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী। এতে উপস্থিত রয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিদেশি কূটনীতিক। এছাড়াও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ড. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীও অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।

জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *