‘প্রধান বিচারপতি থাকাকালেই আমাকে দেশ থেকে বের করে দিল ,কেউ কথা বলল না– সিনহা

Slider জাতীয় টপ নিউজ


ডেস্ক: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা বিষয়ে কানাডার টরন্টোতে বসবাসরত সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) বলেছেন, ‘জেনে-শুনেই এই মামলা করেছে আমাকে পানিশমেন্ট (শাস্তি) দেওয়ার জন্য। আমার চরিত্র হননের জন্য।’ এস কে সিনহাসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে গত রবিবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড) নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী) অন্য মামলায় কারাগারে আছেন।

গত ৯ ডিসেম্বর এই ১১ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। সেটি আমলে নিয়ে আদালত সর্বশেষ এ নির্দেশে ২২ জানুয়ারি পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন। সেদিন গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জানুয়ারি নিউইয়র্ক সময় রবিবার বেলা ৩টায় (বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোররাত ২টা) কানাডার টরন্টো থেকে টেলিফোনে এস কে সিনহা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের (রাজউকের প্লট) বাড়ি যার কাছে বিক্রি করেছি, তিনি ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন সেই বাড়ি বন্ধক দিয়ে। সুদসহ মোট ৫ কোটি টাকা তিনি পরিশোধ করেছেন বলেও জেনেছি। সেই ঋণের অর্থকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে অনাদায়ী খাতেও নেওয়া হয়েছে বলে জানি না।’ এস কে সিনহা উল্লেখ করেন, ‘আমি ওই বাড়ি বিক্রির অর্থ দিয়ে উত্তরার চার নম্বর সেক্টরে দুটি অ্যাপার্টমেন্ট আমার নামে এবং আরেকটি ক্রয় করেছি আমার মেয়ের নামে।’ মামলা এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিতে ক্ষুব্ধ সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহা বলেন, ‘আমি সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না। আমাকে সামাজিক-রাষ্ট্রীয়ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার অভিপ্রায়েই এসব করা হচ্ছে।’ এস কে সিনহা এ সময় উল্লেখ করেন, ‘গত চারটি সরকারের আমলেই (খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনা) ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ওভার ইনভয়েস, আন্ডার ইনভয়েসে লোপাট হয়েছে, জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এসব নিয়ে সরকারের কিংবা দুদকের কোনোই মাথাব্যথা নেই। মামলাও করছে না। নিজের বাড়ি বন্ধক দিয়ে ঋণ গ্রহণকারী যদি সে অর্থ বিধি অনুযায়ী পরিশোধ না করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যাংক কর্তৃক আইনের আশ্রয় গ্রহণের রীতি আছে। এ ক্ষেত্রে কিন্তু সেটি ঘটেনি। এ ছাড়া আমি আমার আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে যতদূর জেনেছি, আমার বাড়ির ক্রেতারা ইতিমধ্যেই সুদসহ পাঁচ কোটি টাকা পরিশোধ করেছেন এবং রীতি অনুযায়ী কিস্তি দিচ্ছেন।’ ওই ঋণ অ্যাকাউন্ট যে বকেয়ার তালিকাভুক্ত হয়নি সে তথ্য তারা দুদকে জানাননি কেন- এ প্রসঙ্গে এস কে সিনহা বলেন, ‘কোথায় সাবমিট করবে? কারও কোনো কথা বলার কি রাইট আছে?’

‘আপনার বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদানের পর গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে, এর বিরুদ্ধে আত্মপক্ষ সমর্থনের কথা ভাবছেন কিনা’ জানতে চাইলে এস কে সিনহা বলেন, ‘যেহেতু আমি আইনের একজন লোক, তারা চিন্তা-ভাবনা করে, জেনেশুনেই এই মামলা করেছে আমাকে পানিশমেন্ট (শাস্তি) দেওয়ার জন্য।
এ ব্যাপারে তাদের স্থির সিদ্ধান্ত রয়েছে। তারা আমার ইমেজ নষ্ট করতে চাচ্ছে। আমার চরিত্র হনন করতে চাচ্ছে। করুক, এমন তো হয়েছে। আগেও হয়েছে।’ এতদ সত্ত্বেও আপনি এই মামলায় ফাইট (আত্মপক্ষ সমর্থন) করতে কোনো আইনজীবী নিয়োগ করতে চান কিনা জানতে চাইলে সিনহা বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি থাকাকালেই আমাকে দেশ থেকে বের করে দিল।

কেউ কোনো কথা বলল না। ইন-সার্ভিসে, তখনই আমি কোনো সুযোগ পাইনি, এখন আমি কে?’ শুরুতে তিনি বলেছেন, ‘আমার সাক্ষাৎকার নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না, কারণ মামলার বিবরণীতেই সবকিছু উল্লেখ রয়েছে।’

সৌজন্যে বাংলাদেশ প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *