ডেস্ক |রাখাইনে ২০১৭ সালের রক্তাক্ত নৃশংসতাকে ‘আভ্যন্তরীণ সংঘাত’ আখ্যায়িত করে হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের সেনাদের পক্ষে সাফাই গাইলেন তাদের নেত্রী অং সান সুচি। সুচি দাবি করেন, সেনা সদস্যরা যুদ্ধাপরাধ করে থাকলে তা মিয়ানমারের দেশীয় তদন্ত ও বিচার ব্যবস্থায় নিস্পত্তি করা হবে। এটিকে আন্তর্জাতিকীকরণের সুযোগ নেই। ১৯৪৮ এর গণহত্যা সনদ এখানে প্রযোজ্য নয়। তিনি বললেন, আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) মতো স্থানীয় সশস্ত্র গ্রুপগুলোর হামলার জবাবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়েছে। এ সময় তিনি রাখাইন রাজ্যের অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিমুলক চিত্র তুলে ধরার জন্য গাম্বিয়াকে দায়ী করেন। আইসিজেতে তার দেশের বিরুদ্ধে আনীত গণহত্যা মামলায় আজ বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল তিনটায় দেয়া বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন। বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করেন।
অং সান সুচি প্রশ্ন রাখেন একটি রাষ্ট্রের কোনো একটি অংশে কি গণহত্যা হতে পারে? যে দেশ অন্যায়ের জন্য অভিযুক্ত তার সেনা কর্মকর্তা ও অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে, বিচার করে এবং শাস্তি দেয়। যদিও এখানে সেনা কর্মকর্তাদের ওপর ফোকাস করা হয়েছে, আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, যথাযথ প্রক্রিয়ার অধীনে বেসামরিক পর্যায়ের অপরাধীদের বিরুদ্ধেও নেয়া হবে। সুচি তার বক্তব্যে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতিকে জটিল বলে আখ্যায়িত করেন। সেখানে সন্ত্রাসীদের থেকে ওই এলাকা মুক্ত করার জন্য অভিযান চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। প্রায় ১৫ মিনিট বক্তব্য রাখেন তিনি। সুচি বলেন, গণহত্যার উদ্দেশ্য শুধু মিয়ানমারের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হতে পারে না। গণহত্যা একটি অপরাধ বলে স্বীকার করেন তিনি। সু চি বলেন, ক্লিয়ারেন্স অপারেশনকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুধুমাত্র সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবেলার প্রশ্নে ব্যবহৃত হয়েছে। অং সান সুচি আরাকানে মুসলমানদের ইতিহাস বর্ণনা করে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোকে সংঘাতের ফল হিসাবে অভিহিত করেন। কয়েকশত মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বক্তব্য দিলেও তিনি বলেন যে, অভ্যন্তরীণ তদন্ত ও বিচার ব্যবস্থা কাজ করছে।