‘ভাল মন্দ মিলিয়ে সকলি’

বাধ ভাঙ্গা মত

untitled-2_167909_0বছরটা যখন শুরু হয়, তখন বাংলাদেশে আন্দোলনের নামে এক ভয়াবহ প্রাণঘাতী যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছিল। অসাংবিধানিক পন্থায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে দেশে জামায়াত-বিএনপি যে তাণ্ডবের সৃষ্টি করেছিল, তা এ দেশের মানুষ ১৯৭১ সালের পর তেমন একটা দেখেনি। চারদিকে পেট্রলবোমার আগুনে মানুষের ঝলসানো শরীর। অফিস ফেরত কর্মজীবী মানুষ, শিশু, মহিলা, প্রতিবন্ধী, সেনা, বিজিবি, পুলিশ সদস্য- বাদ যাচ্ছেন না কেউ। হাসপাতালের বার্ন ইউনিটগুলোতে পা ফেলার উপায় নেই। তস্করদের লাগানো আগুনে জ্বলছে যানবাহন আর রেলস্টেশন। বাদ যাচ্ছে না পুলিশ ফাঁড়ি, রেল সেতু আর রেললাইন। সার্বিক বিচারে দেশে যখন এমন দমবন্ধ করা অবস্থা, ঠিক তখনই কিন্তু বছরটা শুরু হয়েছিল একটি অত্যন্ত ভালো খবর দিয়ে। এমন একটা যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে জানুয়ারির এক তারিখে দেশের স্কুলশিশুদের মধ্যে পৌঁছে গেল প্রায় ২৭ কোটি পাঠ্য বই। এটি বিশ্বে একটি নজিরবিহীন ঘটনা। ভালো-খারাপ মিলিয়ে বছরটা শুরু হলেও শেষ হলো ভয়াবহ পরিবেশবিধ্বংসী সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে গত ৯ ডিসেম্বর তেলবাহী এক জাহাজডুবিতে। এই জাহাজডুবির কারণে ওই এলাকার পরিবেশ বিপর্যয়ের ধাক্কা সামাল দিতে আমাদের অনেক বছর লেগে যাবে। বছর শুরুতে একদিকে অনুষ্ঠিতব্য ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে এক দমবন্ধ করা পরিস্থিতি, অন্যদিকে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে দেশ-বিদেশের দূতিয়ালদের রাত-দিন দৌড়ঝাঁপ। শেষতক নির্বাচন হয়েই গেল; আর সেই নির্বাচন বয়কট করল জামায়াত-বিএনপি জোট। হতাশ হলো নির্বাচনবিরোধী মহল। কিন্তু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল দেশের মানুষ। এখন বছরের শেষ সপ্তাহে এসে হিসাব মেলানোর পালা- কেমন গেল গত এক বছর, দেশে ও দেশের বাইরে?

প্রথমে দেশের কথায় আসা যাক। পাশ্চাত্যের ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশের ইচ্ছা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে থাকুক। এতে তাদের নানা সুবিধা। সুযোগমতো তারা গণতন্ত্রের দোহাই দেয়। বলে নির্বাচনে জামায়াত-বিএনপি জোটই যদি না থাকল তাহলে গণতন্ত্র কিভাবে রক্ষা হবে? এমন অবস্থায় নির্বাচন করে শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর পর তাঁর কিছুটা নার্ভাস থাকাটা বিচিত্র নয়। তবে তাঁর নিজের উদ্যোগ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাড়তি খাটাখাটুনিতে সেই পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টাতে শুরু করে। বাংলাদেশের নির্বাচনের রেশ না কাটতেই ভারতে অনুষ্ঠিত হলো তাদের ষোড়শ লোকসভার নির্বাচন। সারা দুনিয়াকে অনেকটা হতভম্ব করে দিয়ে দিল্লিতে ক্ষমতাসীন হলো কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি। ধরাশায়ী হলো কংগ্রেস। কংগ্রেসকে আওয়ামী লীগের বন্ধু মনে করা হয় দুই দেশেই। উল্লাসধ্বনি শোনা গেল জামায়াত-বিএনপি তাঁবুতে। এ বিজয় যেন বিজেপির নয়, জামায়াত-বিএনপির বিজয়। কংগ্রেসের বন্ধু আওয়ামী লীগ বিজেপির শত্রু হতে বাধ্য। দিল্লিতে বিজেপি সরকার গঠনের কিছুদিনের মাথায় ঢাকা সফরে এলেন মোদি সরকারের হাইপ্রোফাইল পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সাতসকালে ঘুম থেকে উঠে বিএনপিপ্রধান খালেদা জিয়া ছুটলেন সুষমার হোটেলে একগাদা নালিশ নিয়ে। জাত রাজনীতিবিদ সুষমা। বুঝতে পারেন কার কী মতলব। সব কিছু শুনলেন মনোযোগ দিয়ে। এ বিষয়ে মন্তব্য করলেন না কিছু। সুষমা গেলেন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাড়িতে। দুজনের পরিচয় দীর্ঘদিনের। কুশলবিনিময় হলো। আলাপ-আলোচনা হলো। খোশগল্পও বাদ যায়নি। দেশে ফেরার পথে সাংবাদিকদের জানিয়ে গেলেন, সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এতে ভারতের বলার কিছু নেই। জামায়াত-বিএনপি কিছুটা হতাশ তো হবেই।

‘ভাল মন্দ মিলিয়ে সকলি’

প্রধানমন্ত্রী প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে গেলেন জাপান। তাঁকে দেওয়া হলো এক অভূতপূর্ব লালগালিচা সংবর্ধনা। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানকে রাখা হলো রাজপ্রাসাদে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে অঙ্গীকার করলেন প্রায় সাত বিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন সহযোগিতার। জানিয়ে দিলেন তাঁরা চট্টগ্রামের অদূরে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে অর্থায়ন করবেন। ফিরে এসে প্রধানমন্ত্রী গেলেন চীন। চীন বাংলাদেশের বড় উন্নয়ন ও ব্যবসায়িক পার্টনার। একাত্তরে বাংলাদেশের জন্মলগ্নে চীন যে বিরোধিতা করেছিল, তার জন্য কিছুটা হলেও অপরাধবোধ তো আছে। সুযোগ পেলেই তা কাটিয়ে উঠতে চায়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চীন ও রাশিয়ার প্রচুর সরঞ্জাম আছে, যার সিংহভাগই শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় তখন ক্রয় করা হয়েছে। দুই দেশই ভদ্রভাবে জানিয়ে দিল শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে কাজ করতে তাদের কোনো অসুবিধা নেই। প্রধানমন্ত্রী গেলেন জাতিসংঘে। দেখা হলো জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে। পরিবেশ বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ। এখন অতীতকে পেছনে ফেলে সামনে তাকানোর সময়। প্রধানমন্ত্রীর সফর তালিকা থেকে বাদ গেল না যুক্তরাজ্য। কেউ এখন আর ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামায় না। ঘামান শুধু বেগম জিয়া আর তাঁর সভা পারিষদরা। বেগম জিয়া এখন জনসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন। মঞ্চে উঠেই বলেন, এই সরকারকে কেউ স্বীকৃতি দেয় না। বিদেশি কোনো শক্তির কোনো সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া না দেওয়ার কোনো ব্যাপার নেই। তারা তো এর আগে সামরিক একনায়কতন্ত্রকেও সমর্থন করেছে। তারা শুধু বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলোর ওপর দাদাগিরি করতে চায়। পারলে ভালো। না পারলে ‘কী আর করা’ ভাব। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আর সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী যথাক্রমে কমনওয়েলথ দেশসমূহের পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের ও আন্তর্জাতিক পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হলেন। শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বার অত্যন্ত সম্মানজনক সাউথ সাউথ পুরস্কারে ভূষিত হলেন। বিরোধী শিবির থেকে প্রথমদিকে বলা হলো, এগুলো তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্জন নয়। এখন আবার কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন, আসলে বাংলাদেশ এই পুরস্কারগুলো বিরাট পরিমাণের অর্থ দিয়ে কিনে নিয়েছে।

২০১৪ সালে বাংলাদেশের গর্ব করার মতো বড় পদক্ষেপটি ছিল পদ্মা নদীর ওপর নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ করার যাত্রা শুরু করা। এই এক সেতু নিয়ে কতই না নাটক! শুরুতে সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করার কথা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক আর জাপানের জাইকার। সঙ্গে আইডিবিও থাকবে। উড়ে এলো বিশ্বব্যাংক। বলল, আমরাও থাকতে চাই মূল অর্থ লগ্নিকারী সংস্থা হিসেবে। বেশ ভালো। চুক্তি সই হলো। কিছুদিন না যেতেই এই শেষ সময়ে উড়ে আসা তরফটা জানিয়ে দিল আপাতত তারা এই সেতুর অর্থায়ন বন্ধ রাখছে, কারণ তারা গোপন সূত্রে খবর পেয়েছে এই সেতু নির্মাণে দুর্নীতি হতে পারে। অনেকটা ঈশ্বরের ভূমিকায় বিশ্বব্যাংক! কারণ এক ঈশ্বর ছাড়া কারো পক্ষে তো সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব না কী হতে পারে ভবিষ্যতে। এই খবরে বিরোধী শিবির বেশ চাঙ্গা। এই সেতু হবে না, কারণ সব টাকা সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী আর সাঙ্গোপাঙ্গ মেরে দিয়েছেন। তাদের কথায় বিশ্বাসও করলেন অনেকে। যে অর্থ দেওয়া হয়নি, তা মেরে দেয় কিভাবে? কে শোনে কার কথা! উড়ে এলো বিশ্বব্যাংকের তদন্তকারী দল। বলল, এই তদন্তকাজ শেষ হতে সময় লাগতে পারে দীর্ঘ। টাকা মেরে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের তালিকায় ছিলেন দুই কানাডীয় নাগরিক। সেই দেশের এই দুই সম্ভাব্য চোরের বিরুদ্ধে মামলা উঠল। তারপর অনেকটা বাংলাদেশি কায়দায় মামলার তারিখ পরিবর্তন শুরু হলো। বাংলাদেশের অবস্থা অনেকটা ‘ভিক্ষা চাই না কুত্তা সামলাও’! বাংলাদেশ একসময় সাফ জানিয়ে দিল, আমরা নিজস্ব অর্থায়নেই এই সেতু নির্মাণ করব। এক বর্ষীয়ান সাংবাদিক (বর্তমানে প্রয়াত) মধ্যরাতের টিভি টক শোতে গিয়ে বলেন, ‘ওমা বলে কী? শেখ হাসিনা বাঁশের সাঁকো আর পদ্মার ওপর সেতুর মধ্যে এখনো তফাৎ বুঝলেন না?’ না, তিনি ঠিকই বুঝেছেন। আসলে শেখের বেটি তো। আর কিছু না থাকুক আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি নেই, সাহস তো আছেই। বলেন, যে দেশের মানুষ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করতে পারে, সেই দেশ পদ্মা সেতুও নির্মাণ করতে পারবে। একজন সিনিয়র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকও টাকা মেরে দেওয়া তত্ত্বে বিশ্বাস করেছিলেন। তাঁর কাছে প্রশ্ন করি, এখনো তিনি বিশ্বাস করেন কি না এই তত্ত্বে? অকপটে স্বীকার করেন, না, করেন না। তখন করেছিলেন কারণ কিছু সংবাদপত্র বিষয়টাকে এমনভাবে নিয়মিত উপস্থাপন করত যাতে তা বিশ্বাসযোগ্য হয়।

২০১৪ সালের আরেকটি বড় অর্জন খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া। ভাবা যায়, একসময় একটি নিয়মিত খাদ্য ঘাটতির দেশ খাদ্য রপ্তানি করছে! শ্রীলঙ্কা এক লাখ টন চাল আমদানি করবে বলে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে। ভারতও তার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর জন্য ৩০ থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশ থেকে আমদানির আগ্রহ দেখিয়েছে। আনন্দ করার মতো সংবাদই বটে। আসলে বাংলার কৃষকই এই দেশের প্রকৃত হিরো। তাদের শুধু একটু সহায়তা প্রয়োজন। এই বছর দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ বিলিয়ন ডলারে, যা সর্বকালের রেকর্ড। সঙ্গে আছে বিদেশি রেমিট্যান্স প্রবাহের ক্রমোন্নতি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের রপ্তানি পণ্যের ওপর যে জিএসপি সুবিধা দিত, তা বাতিল করেছে এবং এই সুবিধা পুনঃপ্রবর্তনকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। এর পরও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে দেশের প্রবৃদ্ধি সব সময় ৬ শতাংশের ওপর থেকেছে। প্রথমদিকে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তির দিকে থাকলেও তা বর্তমানে ৬-৭ শতাংশের মধ্যে আছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পেরেছে সরকার। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এসব অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেক অর্থনীতিবিদকেও অবাক করেছে।

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাটি ১৬ ডিসেম্বর ঘটে পাকিস্তানের পেশোয়ারে। একটি স্কুলে ঢুকে তালেবান জঙ্গিরা ১৪৫ জনকে হত্যা করেছে, যার মধ্যে ১৩৫ জন ছিল সাত থেকে ১৫ বছর বয়সের স্কুলশিক্ষার্থী। সারা বিশ্ব এই বছর মধ্যপ্রাচ্যে ভয়াবহ জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের উত্থান দেখেছে। এই সংগঠন এরই মধ্যে ইরাককে তিন খণ্ডে বিভক্ত করে ফেলেছে। সিরিয়ার বেশ বড় অংশ দখল করে নিয়েছে। হত্যা করেছে কয়েক শ নিরপরাধ মানুষকে। ইসলামের নামে ধর্ষণ ও জোরপূর্বক বিয়ে করা জায়েজ করেছে এই নতুন দুর্বৃত্তরা। একই কায়দায় নাইজেরিয়ায় উত্থান হয়েছে আর এক জঙ্গি সংগঠন বোকো হারামের। তাদের মূল কাজ শিশু অপহরণ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা। এই জঙ্গিদের সমর্থক বাংলাদেশেও যে নেই, তা কিন্তু নয়। আগামী দিনগুলোতে তারা এই দেশে কী করে তা দেখার বিষয়। এই উন্মাদদের ক্রিয়াকলাপ শুধু মধ্যপ্রাচ্য বা আফ্রিকায় সীমাবদ্ধ থাকবে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। পশ্চিমের অনেক দেশের আইনকানুন এদের যথেষ্ট প্রশ্রয় দেয়, যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ যুক্তরাজ্যে এদের অবাধে প্রচার চালাতে দেওয়া। বাংলাদেশের বাইরে জামায়াত-শিবিরের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি ব্রিটেনে। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বলে থাকে, তারা সমান অধিকারের দেশ। কিন্তু সেই যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি কালোদের প্রতি সাদা পুলিশ ও আইনের আচরণ ও পক্ষপাতিত্ব দেখে মনে হচ্ছে, সেখানে বর্ণবাদ আবার নতুন শক্তিতে ফিরে আসছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারত। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর সেখানে আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও শিবসেনা ঘোষণা করেছে, অদূর ভবিষ্যতে ভারতে শুধু হিন্দুরা থাকবে, আর কেউ নয়। এটি একটি চরম সর্বনাশা চিন্তাধারা। হিন্দু পরিষদ তো জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ শুরু করেছিল। চারদিকে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হলে তা আপাতত বন্ধ আছে। সার্বিক বিশ্লেষণে এটি মনে হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে, বিশ্ব পরিস্থিতি আগামী দিনে আরো অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কা আছে। তবে বাংলাদেশে বছরটি শেষ হলো সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ১০০ ভাগ বেতন বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব ঘোষণার মধ্য দিয়ে। আগামী বছরের শুরু থেকেই সংশ্লিষ্ট সবাই, যার মধ্যে বাড়িওয়ালা থেকে শুরু করে পাড়ার দোকানদার- সবাই আছেন, অপেক্ষা করবেন সেই প্রস্তাবের কতটুকু সরকার গ্রহণ করছে। সবাই এই বেতন বৃদ্ধি থেকে কিছু নাজায়েজ ফায়দা তো নিতে চাইবেই।

সবাইকে আসন্ন নতুন বছরের একরাশ শুভেচ্ছা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *