দিয়াবাড়ির কাঁশফুল যেন শীতের আগমন বার্তা

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি


মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক সুমন, উত্তরা প্রতিনিধিঃ
চারদিকে শরতের শুভ্র কাঁশফুল, আর লেকের ধারে শরীর মন জুড়িয়ে দেওয়া বাতাস। কেউ বসে গল্প করছেন। কেউ বা ফুলের সঙ্গে ছবি তুলছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই আসছেন এই কাশবনে। দুপুরের খরতাপ খানিকটা ম্লান হয়ে আসলে লোকসমাগমে জমজমাট হয়ে ওঠে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকা। কাঁশফুলের সমারোহে বিকেলের বাতাস যেন শীতের আগমনের বার্তা দিচ্ছে।

রাজধানী উতন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উত্তরা তৃতীয় পর্যায়ের সম্প্রসারিত প্রকল্পের অংশ এই দিয়াবাড়ি। উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরে এই প্রকল্প এখন ফাঁকাই পড়ে আছে। বালুমাটি ফেলে সমতল করা এই বিশাল মাঠের মতো খোলা জায়গাটি ভরে গেছে শরতের শুভ্র কাঁশফুলে। কাঁশবনের ভেতর দিয়ে পথ। নগরের যান্ত্রিক পরিবেশ থেকে একটু প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসা নগরবাসী হাঁটতে থাকেন এই পথ ধরে। লোকসমাগমের কারণে বেশ কিছু হালকা খাবারের দোকানপাটও গড়ে উঠছে এখানে।
গত শুক্রবার ছুটির দিনে দুপুর থেকেই শুরু হয়েছিল লোকের সমাগম। বিকেল নামতেই পুরো এলাকা যেন এক গ্রামীণ মেলা। রকমারি খাবারের পসরা। সারি সারি ফুচকা চটপটির দোকান। ঘুরে ফিরে লোকজন এসে ভিড় জমাচ্ছেন এসব দোকানে।

তবে এ সৌন্দর্য্যরে মাঝে কিছু ছেদ ফেলেছে নির্মানাধীন মেট্রোরেল এর কর্মযজ্ঞ। দুই একদিন থেকে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। প্রধান কয়েকটি রাস্তা কাঁদামাটিতে ভরা। চলতে সমস্যা হয়। তবে নিজস্ব গাড়ীতে আসা লোকদের সেটা থেকে হয়তো কিছুটা রেহাই মিলে। আবার বৃষ্টি না থাকলে উঠে ধুলাবালি। প্রকল্পের কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এবার এ অবস্থা থাকলে সামনের বছর উত্তরার দিয়াবাড়ী সাজবে অপরূপ সাজে। জানালেন স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি।

দিয়াবাড়ির বটতলা থেকে কিছুটা সামনে ৩ নম্বর সেতু। সেতুর দুই পাশে লেকের পাড়ে গড়ে উঠেছে বোট হাউস। বাঁশ ও কাঠের কাঠামো দিয়ে বানানো হয়েছে বসার জায়গা। সারি দিয়ে বাঁধা প্যাডেল বোট (পায়ে চালিত নৌকা)। ঘন্টা ভিত্তিতে ভাড়া করে ঘুরতে পারবেন। ছুটির দিনে অনেকেই এসব নৌকা ভাড়া করে ঘুরছিলেন। তাঁদের একজন মিরপুর ১ নম্বর এলাকার আমিন সরকার। তিনি বললেন, ‘কাঁশফুল দেখতে এসেছিলাম। এখানে এসে দেখি পায়ে চালিত নৌকাও আছে। তাই পরিবারের সবাই মিলে একটু নৌকায় ঘুরলাম। ফুরফুরে বাতাসে মনটাই ভালো হয়ে গেছে।’

দিয়াবাড়িতে রাস্তার দুই পাশে যেমন কাঁশফুল আছে তেমনি ফাঁকা জায়গার ভেতরেও কাঁশফুল আছে। কিন্তু ফাকা জায়গার মাটি ওপর থেকে শক্ত দেখালেও সব জায়গায় একই রকম নয়। অনেক জায়গায় মাটি নরম। চোরাবালির মতো। পা আটকে যায়। এই কাঁশফুল আর কত দিন থাকবে, জানতে চাইলে স্থানীয় একজন বাসিন্দা, যিনি এ কাঁশফুল দেখেই বড় হয়েছেন, তিনি বলেন, কাঁশফুল দেখার এটাই উপযুক্ত সময়। এখনই এই ফুলের সৌন্দর্য। তবে আর সর্বোচ্চ ২০/২৫ দিন এই ফুল থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *