গাজীপুরে কিশোর খুন

Slider গ্রাম বাংলা

গাজীপুর: গাজীপুরে ‘সিগারেট টানা’ নিয়ে দ্বন্দ্বে এক কিশোর চা বিক্রেতাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে কয়েক কিশোর।

আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে মহানগরীর রাজদিঘীর উত্তর পাড়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহতের নাম নূরুল ইসলাম (১৪) শেরপুরের শ্রীবর্দী থানার ভায়াডাঙ্গা (ভাগাতা) এলাকার পাখি বিক্রেতা ফকির আলীর ছেলে। তারা রাজদিঘী সংলগ্ন ট্যাংকির পাড় এলাকার ফরিদের বাড়িতে ভাড়া থাকে। নূরুলের গাজীপুর জেলা প্রশাসকের রেকর্ড রুমের সামনে চায়ের দোকান রয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের তথ্য পেতে সাজন (১৬) নামের এক কিশোরকে থানায় নিয়ে গেছে গাজীপুর সদর থানার পুলিশ।

সাজনের বড় ভাই রাজনের ভাষ্য, “গতকাল সোমবার দীঘিরপাড়ে ধূমপান করার সময় সাহাপাড়া এলাকার রানা নামের এক কিশোরকে ধমকায় সাজন। তখন নূরুলও সঙ্গে ছিল সাজনের। এরপর তাদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডার পর রানা দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এই দ্বন্দ্বেই রানা সঙ্গীদের নিয়ে নূরুলকে হত্যা করেছে বলে সাজন জানিয়েছে।”

“আজ দুপুরের খাবার খেয়ে সাজন ও নূরুল তাদের বাড়ির সামনে অবস্থিত রাজ দিঘীর পাড়ে বসেছিল। কিছু সময়ের মধ্যে ৪-৫ কিশোর চাপাতি হাতে তাদের লক্ষ্য করে এগিয়ে আসতে থাকে। তাদের ওপর হামলা হতে পারে আশঙ্কায় সাজন দৌড়ে পাশের বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। নূরুল পালাতে না পেরে দিঘীর পানিতে ঝাঁপ দেয়। ঘাতকরা পানি থেকে পাড়ে তুলে নূরুলকে চাপাতি দিয়ে পিঠে একটি কোপ দেয়। প্রচুর রক্তক্ষরণে সে অচেতন হলে হামলাকারী কিশোররা সাজনকে আক্রমণ করতে যায়। সাজন তখন যে ঘরে দরজা বন্ধ করে লুকিয়ে ছিল; সেই ঘরের দরজা-জানালায় কোপ ও লাথি মারতে থাকে হামলাকারী কিশোররা। এরপর স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তারা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে নূরুল মৃত বলে জানায় দায়িত্বরত চিকিৎসক।

এই হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, মৃত অবস্থায় বেলা তিনটায় নূরুলকে হাসপাতালে রাকিব নামের একজন নিয়ে এসেছে। নিহতের পিঠে একটি গভীর কোপের ক্ষত রয়েছে। এর ফলে তার স্টমাক ও কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের লাশের ময়নাতদন্ত করতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নিহতের বাবা ফকির আলীর ভাষ্য, তার এক ছেলে, দুই মেয়ে। নূরুল সবার বড়। আগে তারা শহরের সাহা পাড়া এলাকায় বাস করতেন। তিন দিন আগে বাসা বদলে তারা ট্যাংকির পাড় এলাকায় আসেন। আজ সকালে পাখি শিকার করতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে থাকা অবস্থায় তার একমাত্র ছেলে খুন হওয়ার খবর পান তিনি।

গাজীপুর সদর থানার ওসি মো. এজাজ শফির ভাষ্য, ‘সিনিয়রিটি-জুনিয়রিটি’ নিয়ে কিশোরদের মধ্যে বিরোধ হয়। এর জেরেই নূরুল খুন হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।

ঘনবসতি এলাকায় প্রকাশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় আতঙ্কিত স্থানীয়রা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *