ছেলেকে হত্যা করে ‘ছেলেধরার’ গুজব চালানোয় বাবা আটক

Slider জাতীয় টপ নিউজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় ১০ বছর বয়সী শিশু সন্তানকে হত্যার পর ‘ছেলেধরার’ গুজব হিসেবে চালিয়ে দিতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়েছেন বাবা। গতকাল রোববার রাতে উপজেলার ধরমণ্ডল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শিশুটির নাম মো. মোরসালিন। তার বাবা মোসাঈদ উপজেলার ধরমণ্ডল গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। পুলিশের ভাষ্য, মোসাঈদ মাদকাসক্ত। তাঁর ছেলে মোরসালিন ধরমণ্ডল পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

স্থানীয় লোকজন, নিহত শিশুর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১২ বছর আগে ধরমণ্ডল গ্রামের হাসিনা বেগমের সঙ্গে একই এলাকার মোসাঈদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁদের মোরসালিন ও জান্নাত আক্তার (৯) নামের দুটি শিশুসন্তানের জন্ম হয়। কয়েক দিন ধরে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বনিবনা হচ্ছিল না।

গতকাল সন্ধ্যায় ঘর থেকে বের হন মোরসালিন। আধা ঘণ্টা পর রাত আটটার দিকে মোসাঈদও ঘর থেকে বের হন। রাত নয়টার দিকে বাড়িতে এসে মোসাঈদ বলতে থাকেন, তাঁর ছেলে মোরসালিনকে ছেলেধরারা নিয়ে গেছে। সন্দেহ হলে এলাকাবাসী মোসাঈদকে আটক করে। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাড়ি থেকে ২০০-২৫০ গজ দূরে একটি ডোবায় কচুরিপানাতে মোরসালিনের লাশ লুকিয়ে রাখা দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে। রাত ১১টার দিকে মোসাঈদকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কবির আহমেদ বলেন, মোরসালিন রাত আটটার দিকে ঘর থেকে বের হয়। এ সময় বাইরে ওত পেতে বসে থাকা বাবা মোসাঈদ মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধে এবং গলায় ব্লেড বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মোরসালিনকে হত্যা করে। পরে ছেলের লাশ ডোবায় ফেলে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে দেয়। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে পুলিশের কাছে বক্তব্য দিয়েছেন মোসাঈদ।

এ ঘটনায় নিহত শিশুর মা হাসিনা বেগম বাদী হয়ে থানা হত্যা মামলা করেন। শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সদর মর্গে পাঠানো হয়েছে।

হাসিনা বেগম বলেন, মোসাঈদ নিজের ছেলেকে হত্যা করে ছেলেধরা গুজব হিসেবে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর ওপর প্রতিশোধ নিতে কিংবা কোনো প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মোসাঈদ এ ধরনের কাজ করেছেন বলে ধারণা করছেন রেহেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *