পল্লবীতে এক পরিবারের ৪জন সহ ১০ জন নিহত

Slider জাতীয় টপ নিউজ ঢাকা রাজনীতি

police
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
ঢাকা:

পবিত্র শবে বরাতের রাতে বাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে রাজধানীর পল্লবী এলাকার কালশীতে শনিবার ভোরে দুই পক্ষের মধ্যে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১০ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে চারজন একই পরিবারের। আরেক পরিবারের আছেন আরো দুই সদস্য।

প্রথমে বিহারীদের দুটি পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ বাঁধলেও পরে স্থানীয়রা ও পুলিশ এতে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে এ সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করে। এখনো সংঘর্ষ চলছে। পুলিশ সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছুঁড়ছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির) মিরপুর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইমতিয়াজ আহমেদ নিহতের কথা নিশ্চিত করেছেন। তবে ঠিক কতজন মারা গেছেন তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

এদিকে গনমাধ্যমের দুজন প্রতিনিধি ১০টি অগ্নিদগ্ধ লাশ দেখেছেন।

এছাড়াও মিরপুর-১২ নম্বরের কুর্মিটোলার পাকিস্তানি ক্যাম্পের জয়েন্ট সেক্রেটারি আব্দুস সাত্তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, নিহতদের মধ্যে ৩ জন শিশু, ২ জন নারী ও ৫ জন পুরুষ।

এর আগে সকালে এলাকায় বেশ কিছু বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘরে বাসিন্দারা আটকা পড়ে থাকতে পারেন বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন।

কালসী ও আশপাশের বেশ কয়েকটি রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এসব লাশ এখন ক্যাম্পের ভেতর বিহারিদের একটি অফিসে রয়েছে।

সেখানে থাকা বিহারি যুবক নবাব হুসাইন জানান, তার আত্মীয় আব্দুল কাদের (৯) সহ একই পরিবারের চারজন মারা গেছেন। আরেকটি পরিবারের দুইজন সদস্য অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন বলে জানান নবাব।

উপ-কমিশনার (ডিসি) ইমতিয়াজ আহমেদ আরো জানান, কয়েকদিন আগেও একই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে বিহারিদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে তাদের সঙ্গেও সংঘর্ষ হয় বিহারি ও স্থানীয়দের।

শনিবার ভোরেও এ ধরনের বিষয় নিয়েই স্থানীয় ও বিহারিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে রাস্তার পাশে থাকা দুটি বিহারি বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ আগুন দুর্ঘটনার নাকি, ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ লাগিয়েছে তা জানা যায়নি বলে জানান পুলিশের ডিসি।

তিনি আরো বলেন, “আমি কয়েকজনের মারা যাওয়ার কথা শুনেছি। তবে ঠিক কতজন মারা গেছেন তা বলতে পারবো না।”

এদিকে এ ঘটনায় মো. আসলাম (৫০), বদর উদ্দিন (৪৫), আরজু (১৬) নামে গুলিবিদ্ধ তিন ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয়েছে।

এছাড়াও ফারজানা নামে এক অগ্নিদগ্ধ নারী ঢামেকে এসেছেন। তার মুখ, শরীরসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ আগুনে পুড়ে গেছে। তিনি মিরপুর-১২ এর কুর্মিটোলা ক্যাম্পে বসবাস করেন।

ফারজানাকে ঢামেকে নিয়ে আসা প্রতিবেশী নুরুদ্দিনসহ কয়েকজন  জানান, ফারজানার ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে। তারা শুনেছেন, ফারজানার মা—বোনসহ পরিবারের চারজন ঘরে আটকা পড়ে মারা গেছেন।

তবে এ কথা বললেও, তারা এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেননি।

এদিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

হঠাৎ এ সংঘর্ষ শুরু হয় বলে জানিয়েছেন পল্লবী থানা পুলিশ।

থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহাবুবুল হক বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

এদিকে আহত আসলামের স্ত্রী নাজমা বেগম জানান, আনুমানিক সকাল ৭টায় পল্লবী কালশীর নতুন রাস্তায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পুলিশের গুলিতে আসলাম আহত হন। তার পিঠে গুলি লাগে।

আসলাম তার পরিবারসহ মিরপুর-১২ এর কুর্মিটোলা ক্যাম্পে বসবাস করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *