স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা বন্ধের বিষয়ে বিজিবি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সরকার এ ব্যাপারে কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রযোজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সীমান্ত হত্যাকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে বিএসএফও একমত পোষণ করে আসছে। এসময় তিনি সংসদে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী নাগরিককে হত্যার বছর ভিত্তিক একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত দশ বছরে সীমান্তে ২৯৪ জন বাংলাদেশী নাগরিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের আজকের বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনপির মো. হারুনুর রশীদের (চাপাই নবাবগঞ্জ-৩) প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
সংসদে দেওয়া মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে সীমান্তে নিহতের সংখ্যা ৬৬ জন, ২০১০ সালে নিহতের সংখ্যা ৫৫ জন, ২০১১ সালে নিহতের সংখ্যা ২৪ জন, ২০১২ সালে নিহতের সংখ্যা ২৪ জন, ২০১৩ সালে নিহতের সংখ্যা ১৮ জন, ২০১৪ সালে নিহতের সংখ্যা ২৪ জন, ২০১৫ সালে নিহতের সংখ্যা ৩৮, ২০১৬ সালে নিহতের সংখ্যা ২৫ জন, ২০১৭ সালে নিহতের সংখ্যা ১৭ জন ও ২০১৮ সালে নিহতের সংখ্যা ৩ জনকে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা দিনে-রাতে নজরদারিতে:
অসীম কুমার উকিলের (নেত্রকোনা-৩) তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা-আহত-আটক ইত্যাদি নিয়ে প্রতিনিয়ত বিজিবি এবং বিএসএফ’র বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়মিতভাবে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সকল পতাকা বৈঠকে সীমান্তের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। পাশাপাশি সরকার ও কূটনৈতিক পর্যায়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সাম্প্রতিককালে সীমান্ত এলাকার জনগণের মধ্যে এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে কনফিডেন্স বিল্ডিং এর নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে যা সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হবে বলে বিশ্বাস। এছাড়াও দিনে-রাতে সীমান্ত এলাকা নজরদারিতে রাখার জন্য বিজিবি এবং বিএসএফ কর্তৃক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সে সকল স্থানগুলো সমন্বিত টহল কার্যক্রমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। বিওপি থেকে পার্শ্ববর্তী বিওপির মধ্যবর্তী দূরত্ব কমানোর জন্য ১২৮টি পোস্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া বিজিবি কর্তৃক সীমান্ত এলাকায় সার্ভিলেন্স সিস্টেম স্থাপনের জন্য ৩২৮ কিলোমিটার স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে।