তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে নিজের আগের অবস্থানেই অনড় রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ইচ্ছে থাকলেও প্রতিবেশি দেশকে যে পানি দেওয়া সম্ভব নয় তা ফের জানিয়ে দিলেন মমতা।
মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার অধিবেশনে উপস্থিত থেকে মমতা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ খুবই দু:খ পেয়েছেন, কারণ আমরা তিস্তার পানি দিতে পারিনি। আমাদের যদি ক্ষমতা থাকতো আমি নিশ্চয়ই তাদের পানি দিতাম।
আমার কোন সমস্যা নেই। বাংলাদেশ আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। এতে কোন সন্দেহ নাই।
’
পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু বাংলাদেশকে ফারাক্কার পানি দিয়েছিলেন-সেকথাও এসময় তুলে ধরেন মমতা। দলের বিধায়ক রহিমা বিবির এক প্রশ্নের উত্তরে মমতা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ না পাওয়ার আক্ষেপ করে মমতা বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা তিস্তার পানি দিতে পারিনি বলে ওঁরা আমাদের ইলিশ মাছ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বর্ষার মৌসুমে আগে বাংলাদেশের ইলিশ বাঙালিদের খাওয়ার পাতে থাকতো। কিন্তু এখন বাজারে কম সংখ্যক বাংলাদেশি ইলিশ পাওয়া যায়।
ইলিশের প্রসঙ্গ তুলে মমতা আরও বলেন, আমরা ইলিশ মাছ নিয়ে ডায়মন্ডহারবারে রিসার্চ সেন্টার করেছি। আমাদের রাজ্যে এখন ইলিশ মাছের অভাব নেই। আগামী দিনে রিসার্চ শেষ হলে গোটা দেশের ইলিশ আমরাই সরবরাহ করতে পারবো। আগামী দুই বছরের মধ্যে বাইরে থেকে আর মাছ আমদানি করতে হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ভারত থেকে তিস্তার পানির দাবি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের প্রবল বিরোধিতার কারণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশের সাথে এই পানি বন্টন চুক্তি এখনও সেরে উঠতে পারেনি। রাজ্যের দাবি বাংলাদেশকে দেওয়ার মতো তিস্তায় পর্যাপ্ত পরিমান পানি নেই। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং’এর ঢাকা সফরেও তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা থাকলেও একেবারে শেষ মুহূর্তে ওই সফর বাতিল করেন মমতা। তার যুক্তি ছিল তিস্তার পানি দিলে উত্তরবঙ্গের মানুষ শুকিয়ে মারা যাবে। তিস্তার বদলে বাংলাদেশকে তোর্সা, মানসই, সংকোশ ও ধানশই নদীর পানি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মমতা। যদিও রাজ্যের ওই প্রস্তাবে রাজি নয় বাংলাদেশ।