ঘুড়ে আসুন বাংলাদেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্পের তিস্তা ব্যারাজ

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি রংপুর

হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাটঃ ডালিয়া নামটি ফুলের মতো হলেও এটি একটি গ্রাম, যা দেখতে কোনো মনোহরিণীর মতো। সবুজে আচ্ছাদিত এ গ্রামটি আকর্ষণ করে সবচেয়ে পথচারীদের। ভারতের উত্তর সিকিমের পার্বত্য এলাকায় তিস্তার উৎপত্তি।

বাংলাদেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্পের তিস্তা ব্যারাজ (Teesta Barrage) লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলাধীন গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানী তে তিস্তা ব্যারাজ নির্মিত।

কিছু অংশ পার্শ্ববর্তী নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলাধীন খালিসা চাপানী ইউনিয়নের ডালিয়া- এর মধ্যবর্তী স্থানে তিস্তা নদীর উপর পরেছে।

তিস্তা পাড়ের মানুষ বারবার দাবী জানাচ্ছেন যে তিস্তা ব্যারাজ কে যেন বিনোদন পার্ক ঘোষনা করা হয়। এতে সরকারের কয়েক লাখ রাজস্ব আয় করতে পারবেন ব্যারাজে নিরাপত্তার জন্য রয়েছে আনসার ও পুলিশ সদস্য।

ব্যারাজ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে নীলফামারী জেলা দিয়ে। এ নদী বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের সব কয়টি জেলা অর্থাৎ নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ওপর দিয়ে প্রবহমান। আশির দশকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে তিস্তা নদীর ওপর গড়ে তোলা হয় বাঁধ। যাকে বলা হয় তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প।

এ ব্যারেজটি তৈরির ফলে নীলফামারি, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার বিশাল এলাকা সেচ সুবিধার আওতায় এসেছে।

নদীর মাঝখানে ব্যারাজ। যান্ত্রিক গেট! টানা ৪৪টি গেট একনাগাড়ে। এর আরেক পাশে আছে আরও আটটি গেট। খালে পানি নেওয়ার জন্য। অনেকগুলোই খোলা। তিস্তা নদীর পানিকে নিয়ন্ত্রণ করে, পানি সংরক্ষণ করে শুষ্ক মৌসুমে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় সেচের কাজে লাগানো হয় এই ব্যারাজ দিয়ে।

লোহা-লক্কড়, কংক্রিটের বিশাল বিশাল সব কাঠামো। নদীর দুপাশে গড়ে তোলা হয়েছে সবুজ বেষ্টনী।

তিস্তা ব্যারেজকে ঘিরে তিস্তার পাড় সেজে উঠেছে অপরূপ সাজে। সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে বেশ কয়টি পিকনিক স্পট। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ দলবেঁধে এখানে এসে পিকনিক করে। বর্ষাকালে তিস্তা যথেষ্টই ভরা ও খরস্রোত থাকে। খালটাও দেখার মতো। বিকেলে অনেকেই আসে বেড়াতে।

ব্যারেজের পাশে পিচ ঢালা কালো রাস্তা দু’পাশ কাশফুলে ঢাকা। অপুরূপ সে দৃশ্য। পিচঢালা সরু পথ ধরে চলতে চলতে মনে হবে এই পথ যেন শেষ না হয়। সবকিছু মিলিয়ে এটি দেখার মত একটি জায়গা।

ভ্রমন পিয়াসুদের জন্য রয়েছে নৌকা ও স্পিড বোর্ড। মাত্র ৪০ টাকা স্পিডবোর্ডে ঘুরা এপাড় থেকে ওপাড়।

কিভাবে যাবেন-

রংপুর শহর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরের এই প্রকল্পে যেতে সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। নীলফামারীর ডালিয়ার গাড়িতে চড়ে যাওয়া যায়, জনপ্রতি ভাড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা। অথবা রংপুর মহিপুর শেখ হাসিনা সেতু হয়ে কাকিনা হয়ে আসা যাবে তিস্তা ব্যারাজে।

লালমনিরহাট সদর হতে অথবা হাতীবান্ধা উপজেলা সদর হতে সড়কপথে তিস্তা ব্যারেজ এ যাওয়া যায়। হাতীবান্ধা উপজেলা সদর হতে সড়কপথে এর দুরত্ব ২০ কিমি। বড়খাতা দোয়ানী মোড় থেকে অটো,ইজিবাইক যোগে ৩০ টাকায় যাওয়া যাবে।

যারা ঢাকা কিংবা অন্য শহর থেকে যাবেন তারা সরাসরি যেতে পারেন নীলফামারী। সেখানে স্কুটার,বাস, রিক্সা কিংবা মোটরসাইকেলে করে যেতে পারেন তিস্তাপারে।

কোথায় থাকবেনঃ

ব্যারেজের পাশেই মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে অবসর রেস্ট হাউজ অবস্থিত।পানি উন্নয়ন বোর্ড অবসর রেস্ট হাউজের তত্ত্বাবধান করে থাকে,এটি ভিআইপিদের জন্য। আইভি নামে আরএকটি রেস্ট হাউজ আছে। এখানে সরকারী ফি-দিয়ে যে কেউ থাকতে পারবেন।
তাদের অনুমতি নিয়ে এ রেস্ট হাউজে অবস্থান করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *