পাহাড়ে লিচুর প্রচুর ফলন হলেও হতাশ কৃষক

Slider টপ নিউজ

পাহাড়ে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় বাজার সয়লাব রসালো মিষ্টি লিচুতে। মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর হাট-বাজার। প্রতিদিন বসছে লিচুর হাট।

এবার পাহাড়ে লিচুর মধ্যে বেশি ফলন হয়েছে চায়না-২, চায়না-৩ জাতের লিচুর। বোম্বে লিচুর ফলনও হয়েছে উচ্চ পরিমাণে। চাহিদা অনেক, দামও চড়া।
তবুও ক্রেতাদের ভিড় লিচু বাজারে। আবার স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে প্রতিদিন শত শত ট্টাক ও বিভিন্ন যানবাহনে লিচু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রাঙামাটির বাইরে। কিন্তু অনুন্নত যোগাযোগ ও যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে সঠিক সময়ে সুষ্ঠু লিচুর বাজারজাত সম্ভব হচ্ছে না। তাই লাভের মুখ দেখছে না বলে অভিযোগ কৃষকদের।
রাঙামাটি কৃষি বিভাগের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রচুর লিচু উৎপাদন হচ্ছে রাঙামাটির পাহাড়ে। বোম্বে লিচু চাষাবাদ হচ্ছে ব্যাপক হারে। পাহাড়ি এলাকায় অভাবনীয় ফলন হওয়ায় দেশী জাতের পরিবর্তে বোম্বে লিচুর পাশাপাশি অধিক হারে চাষাবাদ হচ্ছে চায়না-২, চায়না-৩ জাতের লিচু। এসব জাতের লিচু চাষে মিলছে বাম্পার ফলন। তাই দেশী জাতের লিচুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজার দখলে বোম্বে লিচুর। এছাড়া পাহাড়ে মোজাফ্ফরি জাতের লিচুও আবাদ হয়েছে যথেষ্ট পরিমাণ। ফলনও হয়েছে প্রচুর। এবার মৌসুমে রাঙামাটি জেলায় লিচুর আবাদ হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৭৪২ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে ৭.৬৫ টন করে প্রায় ১ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লিচু বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়।

কৃষকরা বলছে, অতি তাপদাহের কারণে লিচু গাছ থেকে ঝড়ে পড়ছে। বৃষ্টি না হওয়ায় লিচু তেমন বড় হয়নি। অকালে পেকে গেছে লিচুগুলো। তাই লিচুর বাজার তেমন জমছে না। এছাড়া কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ার কারণে পরিবহন সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে। লিচু বিক্রি করে পরিবহন খরচ মেটানো দায়। তাই লিচুর দাম একটু বেশি। তাছাড়া লিচু সংরক্ষণের কোন উপায়ও নেই।

অভিযোগ রয়েছে, রাঙামাটিসহ পার্বত্য তিন জেলায় কেবল সুষ্ঠু সংরক্ষণ ও বাজারজাতের অভাবে প্রতি বছর কোটি টাকার ফলমূল পচে নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে পার্বত্যাঞ্চলের কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা থাকলেও লাভের মুখ দেখছে না কৃষকরা।

সহজ পরিবহন ও সুষ্ঠু বাজারজাত ব্যবস্থা না থাকায় এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের পার্বত্যাঞ্চলে প্রতিবছর কোটি টাকার ফল নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি করেছেন রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা। তিনি বলেন, চাষাবাদের জন্য পার্বত্যাঞ্চল অন্যতম। এ অঞ্চলে প্রায় সব ধরণের ফল চাষ হয়। ফলনও হয় বাম্পার। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে কৃষকের কষ্টের ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পার্বত্যাঞ্চলে হিমাগার স্থাপন করা হলেও অর্থনীতি সম্ভাবনার দার উন্মোচন হতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *