বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা

Slider ঢাকা শিক্ষা


ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে ১৩ মের হামলার ঘটনায় বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রী জারিন দিয়া ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার রাতে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় গতকাল সংগঠন থেকে একজনকে স্থায়ীভাবে ও চারজনকে সাময়িক বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এর মধ্যে জারিন দিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

পদবঞ্চিত অংশের অন্যতম সদস্য, ছাত্রলীগের বিগত কমিটির কর্মসূচি ও পরিকল্পনা-বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ৯টা বা ১০টার দিকে আমাদের সঙ্গে জারিনের শেষ কথা হয়। পরে তাঁর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে গেছেন। পরে ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারলাম, তিনি অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন। তাঁকে আমরা খুঁজতে থাকি। পরে পুলিশের সহায়তায় নম্বর ট্র্যাকিং করে তাঁর সন্ধান পাওয়া গেলে উদ্ধার করে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’ রাকিব জানালেন, আজ দুপুর একটার দিকে জারিন দিয়াকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়া হয়েছে। জ্ঞান ফিরলেও এই মুহূর্তে কথা বলার অবস্থায় তিনি নেই।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ অবস্থায় জারিন দিয়াকে গতকাল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁর ‘পাকস্থলী পরিষ্কার’ করা হয়। হাসপাতালের ৫০২ নম্বর ওয়ার্ডে তিনি ভর্তি ছিলেন। আজ দুপুরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে পাঁচজনকে বহিষ্কারের বিষয়টিকে ‘প্রহসন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া অংশের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক সাঈফ বাবু। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তদন্তের নামে একটি প্রহসন হয়েছে। আমরা আশা করব, আমাদের যেসব আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, সেগুলো যেন এই তদন্তের মতো না হয়ে বাস্তবসম্মত ও গ্রহণযোগ্য হয়।’ সাময়িক বহিষ্কৃত জারিন দিয়া নিজে মধুর ক্যানটিনের ঘটনায় আহত হয়েছেন দাবি করে সাঈফ বাবু বলেন, ‘ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে জারিনকে বহিষ্কার করেছেন ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।’

তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলছেন, ‘শতভাগ সঠিকভাবে’ তদন্ত করেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটি যে সুপারিশ দিয়েছে, তার ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করিনি।’

ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি প্রকাশের প্রায় ১০ মাস পর গত সোমবার ঘোষণা করা হয় সংগঠনের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ওই দিন সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ-না-পাওয়া ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সংবাদ সম্মেলন করতে যান। এ সময় সংগঠনের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। এতে কয়েকজন নারী নেত্রীসহ ১০-১২ জন আহত হন।

মধুর ক্যানটিনের সেই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করে ছাত্রলীগ। কমিটিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কমিটি গত শনিবার রাতে প্রতিবেদন দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *