আগামী নির্বাচনে গোলাপ ফুল মার্কায় ভোট চাইলেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার

Slider বিচিত্র

আগামী নির্বাচনে ভালবাসার প্রতীক গোলাপ ফুল মার্কায় চাইলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুককার।

রবিবার নির্বাচন কমিশন ভবনে বাংলা বর্ষবরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এই সাহিত্যিক বলেন, আসুন আমরা কবিদের একটি রাজনৈতিক পার্টি বানিয়ে ফেলি। আগামী ইলেকশনে আপনারা কবিদের ভালবাসার প্রতীক ‘গোলাপ ফুল’ মার্কায় ভোট দেবেন। আমরা সারাদেশে এমন কবিতার চাষ করব যাতে বিদেশ থেকে সাহায্য আনতে হবে না।

এ সময ক্ষমতায় গেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম চত্বর দখল করে কবিতার তাজমহল বানাবেন বলেও ঘোষণা দেন।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দিনভর নানান অনুষ্ঠান ও খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাসহ অন্যান্য কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন কমিশনের ফোয়ারা চত্বরে খাবাব-দাবারের ব্যবস্থা এবং বেসমেন্টে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মাহবুব তালুকদার বলেন, আমার এখানে যে কবিতাটি এখন পড়ার কথা তার নাম এখনও ঠিক করা হয়নি। কারণ কবিতাটি এখনও আমি লিখিনি। কবিতাটি আমি লিখিনি কারণ আমার কলমে এক ফোটা কালি ছিল না। কলমের কালি ছিল না, কারণ কালি কেনার পয়সার অভাব। পয়সার অভাব বড় অভাব। কারণ আমার কোনো লাইসেন্স পারমিট নেই। লাইসেন্স পারমিট নেই কারণ কবিকে কেউ ব্যবসা দিতে চায় না। কেউ ব্যবসা দিতে চায় না বলে কবিতা লেখা হল না। যে কবিতাটি লেখা হলো না তার নাম ঠিক করে কী লাভ বলেন। যে ছেলে এখনও ভূমিষ্ঠ হয়নি তার আকিকা দেবো কীভাবে।

তিনি বলেন, ভাইসব, আসুন একজন কবিকে আমাদের পার্টির নেতা বানিয়ে তাকে নিয়ে পার্টির উৎপাদন করাই। আমাদের পার্টির নাম হবে কবিতাবাদী দল, কবিতা লীগ বা জাতীয় কবিতা পার্টি। বক্তৃতার বদলে এবার থেকে কবিতা চালু হয়ে যাবে। ছাত্রদের পাঠ্যপুস্তকে শুধুমাত্র কবিতা এবং একমাত্র কবিতা থাকবে।

ছোট গল্প লিখে বেশি পরিচিত পাওয়া এই কমিশনার আরও বলেন, যারা গল্প পড়ে বা প্রবন্ধ লিখে তাদের আমরা ধরে ধরে জেলখানায় পাঠাব। কেউ কবিতার বিরুদ্ধচারণ করলে জনগণের আদালতে তাদের বিচার হবে। আমাদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে সবাইকে কাব্য প্রেমের দীক্ষা নিতে হবে।

আমরা মধ্যপ্রাচ্যে কবিতা সাপ্লাই করে তার বদলে তেল আনব। আমরা সনেট কবিতা দিয়ে এটম বোম তৈরি করব। কারো সঙ্গে যুদ্ধ বাধলে আমরা এমন সব কবিতা পড়ে শোনাবো যাতে শত্রুপক্ষের সৈন্যদল যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে যায়। আমাদের আভ্যন্তরীণ নীতি হবে কবিতার সার্বভৌমত্বের প্রতি অবিচল আস্থা। আমাদের বৈদেশিক নীতি হবে ইটের বদলে পাটকেল কিংবা কবিতার বদলে কবিতা। আন্তর্জাতিক শেয়ার মার্কেটে আমাদের কবিতা চড়া দামে বিক্রি হবে। ভাইসব, যারা কবিতার দলে তারা সবাই একবার হাত তুলুন। বাচ্চারা জোরে তালি বাজাও। তোমরাই একমাত্র ভবিষ্যৎ। তোমাদের মধ্যে ঘাপটি মেরে আছে আগামী দিনের রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুল। যুবকেরা স্লোগান দিন- কবি ও কবিতা জিন্দাবাদ।

তিনি বলেন, আমি আপনাদের মাঝে এমন কবিতা পড়তে চাই যাতে তালি দিতে দিতে সবার হাত ব্যাথা হয়ে যায়। এমন একটি কবিতা লিখতে চাই যাতে রোমান্টিক তরুণেরা আমার দিকে হিংসার দৃষ্টিতে তাকাবে। এমন একটি কবিতা যাতে অফিসে আমার প্রমোশন কেউ ঠেকাতে পারবে না । কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার পক্ষে তেমন কোনো কবিতা লেখা সম্ভব হলো না। আমার কবিতা পড়ার জন্য আপনারা যারা দুঃখিত হয়েছেন তাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আর আপনারা আর মাত্র কিছুদিন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। আমরা খুব শিগগিরই আপনাদের জন্য মহামূল্যবান কবিতা লিখব। আমাদের কবি পার্টি ইলেকশনে জিতে গেলে পয়সার অভাব হবে না । তখন ঘরে ঘরে প্রচুর কবিতার চাষ হবে। কবিতার ফুল দিয়ে সারাদেশে আমরা বিপ্লব ঘটিয়ে দেব। ভাইসব, আপনারা যারা যারা আমার কবিতা শুনতে চান আগামী ইলেকশনে গোলাপ ফুল মার্কা বাক্সে ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *