মিথ্যা মামলায় আসমি গ্রেফতার করাতে নাটক, অবশেষে নিজেই গ্রেফতার!

Slider গ্রাম বাংলা

নাটোরের সিংড়ায় মানুষের প্রলোভনে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তি। পুলিশের তদন্তে মামলায় উল্লেখিত ঘটনার কোনও মিল না থাকায় আসামিদের আটক করেনি পুলিশ। তবে থেমে নেই সেই জাহাঙ্গীর। মিথ্যা মামলায় আসামিদের আটক করাতে জন্ম দিলেন এক নাটকের।

অবশেষে নিজেই গ্রেফতার হয়েছে পুলিশের হাতে।
পুলিশ, স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের বেলোয়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর। গ্রামে বিদ্যুতের সংযোগ আসছে।

সাইফুল নামের এক ইলেকট্রেশিয়ানের সঙ্গে কিছু টাকার বিনিময়ে কাজ করেন জাহাঙ্গীর। বাড়ি প্রতি কাজের বিনিময়ে টাকা পান তিনি। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার সময় নকুল ও সুশীল নামের দুজন ব্যক্তির একটি পুকুর বেধে যায়। জাহাঙ্গীর তাদের পুকুরের ওপর দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চায় কিন্তু তারা রাজি নয়। বার বার গ্রামবাসী বসেও কোনো সুরাহা হয় না। একদিন জাহাঙ্গীরের মাথায় কে বা কারা আঘাত করে, পরে হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা করালে সে সুস্থ্য হয়ে ওঠে। কিছুদিন পরে গ্রামের কিছু লোক তাকে বলে, ‘নকুল ও সুশীলের সঙ্গে তোর ঝামেলা তাদের বিরুদ্ধে মামলা কর। ’ তাদের কথা মত গত ২৮/০২/১৯ তারিখে তিনি নাটোর কোর্টে তাদের বিরুদ্ধে একটা মামলা দায়ের করেন। সিংড়া থানা পুলিশ তার ওপর হামলাকারীদের নামের সাথে ঘটনার সত্যতা পায় না, আসামিরাও গ্রেফতার হয় না। এক পর্যায়ে তিনি একটা নাটকের জন্ম দিলেন। শাশুড়ির বাড়িতে চুরি করে ওই আসামিদের ফাঁসিয়ে দে। মানুষের এমন উস্কানিতে ঘটনার দিন গত বুধবার রাতে (১৩/০২/১৯) তারিখে একটা চুরির ঘটনা ঘটালো। জাহাঙ্গীর থাকে একই গ্রামে শাশুড়ির বাড়িতে। শাশুড়ি লাইলি বেগম (৬৫) তার নাতনী জান্নাতীকে নিয়ে তার বাড়ির একটি ঘরে থাকে এবং পাশের ঘরে থাকে জামাই জাহাঙ্গীর আলম (৪০) ও মেয়ে রেখা বেগম (২৮)। ঘটনার দিন রাতে খাওয়া শেষে সবাই ঘুমিয়ে যায়। পরে রাত্রী প্রায় সাড়ে ১২ টার দিকে কাপড় দিয়ে মুখ বেঁধে দুইজন লোক লাইলি বেগমের ঘরে প্রবেশ করে। তারা লাইলি বেগমের নাতনী জান্নাতির গলা থেকে সোনার চেইন নেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু তার চিৎকারে তারা চেইন নিতে পারেনি। তবে লাইলি বেগমকে কিলঘুষি মেরে কানের লতি ছিড়ে ৪ আনা ওজনের সোনার রিং নিয়ে যায়। পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তার জামাই জাহাঙ্গীরের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নকুল ও সুশীলকে ফাঁসানোর জন্য তাদেরসহ কয়েকজনের নাম বলে। পরে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি ওই ঘটনার বর্ণনা দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শফিকুর রহমান আসামি জাহাঙ্গীরের বরাত দিয়ে ঘটনাটির বর্ণনা দেন। এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরের শাশুড়ি লাইলি বেগম সিংড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন
সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *